তিন চাকার যানের কারণে গোপালগঞ্জে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা

ট্রাক ও বাসের সড়ক দুর্ঘটনা
ট্রাক ও বাসের সড়ক দুর্ঘটনা | ছবি: এখন টিভি
1

গোপালগঞ্জ মহাসড়কে দিন দিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বেপরোয়া চালক, তিন চাকার যান আর সরু সড়ক এসব দুর্ঘটনার কারণ বলছেন ভুক্তভোগীরা। এতে উদ্বিগ্ন যাত্রী ও স্থানীয়রা।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দ্রুতগতির দুটি বাসের ওভার টেকিং করার প্রতিযোগিতা নিত্যদিনকার ঘটনা। শুধু তাই নয়, নছিমন ও তিন চাকার অবৈধ যানবাহনও রাজত্ব করছে এ মহাসড়কে। প্রায়শই দ্রুতযানের সঙ্গে চলে তাদের অসম প্রতিযোগিতা।

গোপালগঞ্জের মাঝিগাতি বাসস্ট্যান্ডে সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। ঢাকা-খুলনা ৮৪ কিলোমিটারের এই মহাসড়ক এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, হারাচ্ছে তাজা প্রাণ।

গত এক বছরে শুধু মাঝিগাতিতেই ঘটেছে অন্তত ১০টি সড়ক দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে একটি স্পটেই প্রাণ গেছে ১৩ জনের, আহত অর্ধশত। আহতদের অনেকেই বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্ব।

শুধু মাঝিগাতি নয় চলতি বছরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ অংশের দুর্ঘটনাপ্রবণ ১০টি স্থানে ঘটেছে ১০২টি সড়ক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারিয়েছে ৫৮ জন আর আহত দুই শতাধিক।

এক্সপ্রেসওয়ে পার হলেই শুরু হয় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের সরু রাস্তা, কিন্তু আগের গতিতেই ছুটে চলে যানবাহন। এমন সড়কে বেপরোয়া গতি ও তিন চাকার যান চলাচলই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। আর চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স আর ডোপ টেস্ট নিশ্চিত করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশই কমে আসবে, বলছেন যাত্রীরা।

আরও পড়ুন:

স্থানীয়রা জানান, রাস্তায় চলাচল করা যানবাহনের ড্রাইভাররা বেপরোয়া। রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডার দিলে পাশাপাশি ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করলে দুর্ঘটনার হার অনেকটায় কমে আসত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

হাইওয়ে পুলিশের দাবি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হচ্ছে। তিন চাকার অবৈধ যানবাহন রোধেও সচেষ্ট তারা। কিন্তু তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা। সড়ক সম্প্রসারণ ও বিভাজক তৈরি করা গেলে দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মত হাইওয়ে পুলিশের।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট রাসেল মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা তিন চাকার বাহনগুলো চেক করে থাকি। তিন চাকার বহনগুলোও সড়ক দুর্ঘটনার বিশাল বড় একটি কারণ।’

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান বলেন, ‘জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা প্রায়ই এ বিষয়ে মিটিং করি। এরপরও তারা ওভার স্পিডে চালায়। সড়কের কিছু স্থানে বাঁক আছে সেসব স্থানে স্লো করে চালিয়ে আসলে দুর্ঘটনা কিছুটা কমতে পারে।’

এদিকে, সড়কের বাঁকগুলো যথাসম্ভব কমিয়ে এনে চারলেনে উন্নীত করার কাজ চলছে বলে জানান সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী।

গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী নাবিল হোসেন বলেন, ‘ভাটিয়াপাড়া হয়ে গোপালগঞ্জ- খুলনার যে অংশটি আছে সেটি প্রশস্ত করার প্ল্যান আছে। আর কিছু কিছু জায়গায় বাঁক সরানোর পরিকল্পনা আছে।’

শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যে আটকে না থেকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর উদ্যোগ চান এই অঞ্চলের মানুষ।

এফএস