জ্যামাইকায় শক্তিশালী হারিকেন ‘মেলিসা’র আঘাত, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭

জ্যামাইকায় মেলিসার তাণ্ডব
জ্যামাইকায় মেলিসার তাণ্ডব | ছবি: এখন টিভি
0

চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হয়ে জ্যামাইকায় আঘাত হানতে যাচ্ছে হারিকেন মেলিসা। ক্যাটাগরি পাঁচ ঝড়টির গতি ঘণ্টায় ২৮২ কিলোমিটার; ক্যারিবীয় দেশটিতে পৌনে দুইশো বছরের ইতিহাসে যা নজিরবিহীন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এরইমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে সাতজনে।

ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য সংগ্রহে হারিকেন মেলিসার ভেতর থেকে ঝড়ের দৃশ্য ধারণ করে মার্কিন বিমান বাহিনীর বিশেষ দল। ক্যাটাগরি পাঁচ ঝড়টিকে ‘সর্বনাশা’ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার। ঘণ্টায় ২৮২ কিলোমিটার পর্যন্ত শক্তি সঞ্চয় করে সর্বশক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে জ্যামাইকা উপকূলে।

তার ওপর ক্যারিবীয় সাগরের উষ্ণ পানি হয়ে এগোনোর গতি খানিক ধীর বলে চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় মেলিসা। ১৮৫১ সালে তথ্য নথিভুক্তি শুরুর পর ১৭৪ বছরে জ্যামাইকার ইতিহাসেও সবচেয়ে শক্তিশালীয় ঝড় এটি। নজিরবিহীন ঝড়ো বাতাস, চারদিনে ৪০ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টি আর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের আভাস আবহাওয়াবিদদের। এ অবস্থায় নিত্যপণ্য মজুত করছেন, তবে কতদিন ঘরে আটকে থাকতে হবে জানে না সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘পণ্য সরবরাহের চাপ অনেক বেড়েছে। আমরা সমানে কাজ করে যাচ্ছি। খাবার-পানি মজুত করছে অনেকে। সবাই ঝড়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।’

অন্য আরেকজন বলেন, ‘ঝড়টি ধীরে এগোচ্ছে। যার জন্য আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। কি ঘটবে আমরা জানি না। সৃষ্টিকর্তাই রক্ষা করবেন।’

আরও পড়ুন:

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এরইমধ্যে ব্যাপক দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে জ্যামাইকায়। হয়েছে প্রাণহানিও। রাজধানী কিংস্টোনের উপকূলে উত্তাল সাগর; থমথমে রাস্তাঘাট। আগেই বিভিন্ন এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। দেশের তুলনামূলক উঁচু এলাকাগুলোতে বাতাসের বেগ ৩০ শতাংশ বেশি শক্তিশালী হতে পারে বলে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। দুর্যোগকবলিত মানুষের জন্য বিনামূল্যে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে স্থাপন করা হয়েছে হাজারখানেক অস্থায়ী কেন্দ্র। বন্যার ঝুঁকি কমাতে পরিষ্কার করা হচ্ছে নদীর তীর।

জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস বলেন, ‘সবাইকে যার যার বাড়ির ভেতরে থাকার অনুরোধ করছি। অপ্রয়োজনে বাইরে বের হবেন না, কারণ যেকোনো মুহূর্তে বাতাসের বেগ বাড়তে পারে। ঝড়ো বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যার কবলে পড়তে পারেন। সরকার বলছে না যে নিখুঁত ব্যবস্থা হয়েছে। ভুলত্রুটি হবেই। তাও দুর্যোগের এ সময়ে শূন্য ভুলের লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করছি আমরা।’

ঝড়ে আটকা পড়ার শঙ্কায় তড়িঘড়ি করে জ্যামাইকা ছাড়ছেন অনেক বিদেশি পর্যটক। জ্যামাইকার দিকে এগোনোর আগেই হাইতি আর ডোমিনিকান রিপাবলিকে আঘাত হানে মেলিসা। প্রাণহানির পাশাপাশি বন্যার ক্ষতও দৃশ্যমান। হাইতিতে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে প্রায় চার হাজার মানুষ; স্থগিত দক্ষিণের সাথে ফ্লাইট যোগাযোগ, নিষিদ্ধ নৌযাত্রা।

এফএস