এশিয়া সফরে ট্রাম্প: আলোচনায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ

ডোনাল্ড ট্রাম্প, শি জিনপিং
ডোনাল্ড ট্রাম্প, শি জিনপিং | ছবি: সংগৃহীত
0

ট্রাম্পের এশিয়া সফর ঘিরে ফের আলোচনায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এবার কার্যকর চুক্তির বিষয়ে বেশ আশাবাদী ট্রাম্প। বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর চীন নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর দেশটির ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, বাণিজ্যের পাশাপাশি এশিয়ার আঞ্চলিক সংঘাত নিয়ে আলোচনা করবেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক নতুন করে আবারও আলোচনায়। গত ৯ অক্টোবর বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর করে চীন। এসব খনিজ রপ্তানিতে লাইসেন্স এবং চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির ওপরও নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। এতে বৈশ্বিক উৎপাদন ব্যাহত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পখাতে দেখা দিয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। বৈদ্যুতিক যানবাহন, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এ বিরল খনিজ। বিশ্বে পরিশোধিত বিরল খনিজের ৯০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বাধার পাল্টা জবাব হিসেবে এ কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। সেমিকন্ডাক্টর চিপ ও চীনা সংশ্লিষ্ট জাহাজের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কারোপ উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে দুই দেশের মধ্যে। যদিও এসব পদক্ষেপ এরআগে বাণিজ্য যুদ্ধের ইস্যু ছিলো না। এবার চীনা পণ্যে অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। যা কার্যকর হবে আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে।

এমন অবস্থায় এপেক সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী রোববার এশিয়া সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানেই বৈঠকে বসতে পারেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদী ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে ন্যাটো মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন কেনার বিষয়েও চীনের সঙ্গে আলোচনা হবে।

আরও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের সঙ্গে একটি কার্যকর চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী। বিরল খনিজের বিষয়টি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। এর চেয়ে শুল্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চীন ছাড়াও অন্যান্য অনেক জায়গায় বিরল খনিজ আছে। অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে এসব খনিজ রপ্তানিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বরং সয়াবিন নিয়ে চীনের সঙ্গে চুক্তি করলে মার্কিন কৃষকরা উপকৃত হবে।’

২০১৯ সালের জুনে সবশেষ এশিয়া সফরে গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ট্রাম্পের এবারের সফর হবে নাটকীয়। এশিয়া প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যের পাশপাশি চীন-তাইওয়ান ও দুই কোরিয়ার মধ্যে চলমান আঞ্চলিক সংঘাত নিয়েও ট্রাম্প কথা বলতে পারেন বলে জানান এ বিশেষজ্ঞ।

রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক স্টিফেন নাগি বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে এশিয়া প্রশান্ত- মহাসাগরীয় অঞ্চলের নেতারা। বাণিজ্য চুক্তি না হলেও তাদের আপত্তি নেই। তাদের চাওয়া চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়া। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলমান থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।’

এদিকে, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনায় বড় পতন ঘটেছে মার্কিন শেয়ার বাজারের প্রধান তিনটি সূচকে। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর আয় কমেছে।

এফএস