বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গতকাল (রোববার, ১৯ অক্টোবর) বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তদন্ত ও শাস্তির নিশ্চয়তা দিয়ে বিবৃতি দেন। তবে এরপরও সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করে দলটি।
বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংবাদ জগত, সাংবাদিক ও মিডিয়ার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মতাদর্শগত বিভেদের ঊর্ধ্বে এই সম্পর্ক বিশ্বাস ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, এবং বিএনপি এই সম্পর্কের প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধাশীল।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও উত্তরণে সাংবাদিকদের অবদানের প্রতি দলটি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি তদন্ত ও শাস্তির ব্যাপারে কোনো বিলম্ব বা শিথিলতা না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অপ্রীতিকর এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে অপরাধ ও তার মাত্রা নির্ধারণ করে আগামীকালের (২১ অক্টোবর) মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকসহ সকল মিডিয়া কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পাশাপাশি, বৈধ পাশ ও পরিচয়পত্র ছাড়া অননুমোদিত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যেকোনো প্রকার অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
কী ঘটেছিল?
গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাহিদুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ উঠে। পরে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপির সিলেট বিভাগের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের সময় এ ঘটনা ঘটে। তাকে মারধরের পর তার মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয় এবং তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আরও কয়েকজন সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদক জাহিদুল বলেন, বিএনপির কর্মসূচি কভার করতে রোববার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে যান তিনি। বিকালে সিলেট বিভাগীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের সময় হইচই শুরু হলে তিনি ভিডিও করতে গেলে কয়েকজন তাকে মারধর করে।
তার ফোনটিও কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, পরে সেখানে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিক তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনা নিয়ে আমার দেশ-এর অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ সময় (প্রতিবেদককে মারধরের সময়) হামলাকারীরা বলতে থাকে, আমার দেশ বিএনপির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করছে। এখানে বিএনপির দোষ খুঁজতে রিপোর্টার পাঠিয়েছে।’
পরে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সন্ধ্যায় বিবৃতি দেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আমার দেশ পত্রিকার রিপোর্টার জাহিদ হাসান আঘাতপ্রাপ্ত এবং উপস্থিত কিছু সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হন। গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাই রাজনৈতিক দলের বক্তব্য, বিবৃতি ও কার্যক্রম জনগণকে অবহিত করেন। এ কারণেই রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে গণমাধ্যমের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। আজকের ঘটনা আকস্মিক ও সম্পূর্ণরূপে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।





