১১ অক্টোবর রাতে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে বুধবার সন্ধ্যায় ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। কিন্তু তবুও থামেনি হানাহানি। শুক্রবারও হামলা পাল্টা-হামলায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটলে সীমান্ত সংঘাত উত্তেজনা চরম পর্যায় পৌঁছায়।
সীমান্ত সংঘাত থামাতে শনিবার মধ্যস্থতা করলো কাতার ও তুরস্ক। এই প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে বলে রোববার এক বিবৃতিতে বার্তা দিলো কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে দু'দেশ ফলোআপ বৈঠক করবে বলেও জানিয়েছে কাতার। এর মধ্য দিয়ে সীমান্ত উত্তেজনা পুরোপুরি অবসানে টেকসই শান্তির শক্ত ভিত্তি তৈরিতে বড় অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, ‘উভয়পক্ষই গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে এই জটিল কিন্তু সমাধানযোগ্য সমস্যার ইতিবাচক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’
আরও পড়ুন:
আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান-টিটিপি'র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানে হামলা চালায় বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে ইসলামাবাদ। কাবুল এসব গোষ্ঠীকে নীরবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে বলেও তারা মনে করে। তালেবান ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে দুই হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে টিটিপি'র মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহিংস হামলা বন্ধ করতে তালেবানকে বহুবার সতর্কও করেছে ইসলামাবাদ। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর গত ১১ অক্টোবর দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংস হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন পাকিস্তানের ৫৮ সেনা নিহত হয় বলে দাবি করে তালেবান। অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করে, তাদের সেনাদের পাল্টা হামলায় আফগানিস্তানের তালেবান ও সহযোগী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ২শ' যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
এরপর ৪৮ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতি শুরু আগে শুধু ১৫ অক্টোবর সারাদিনের হামলা-পাল্টা হামলায় ২০ তালেবান সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করে পাকিস্তান। আর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষে শুক্রবার পাকিস্তানের হামলায় আফগানিস্তানের ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় বলে অভিযোগ করে তালেবান। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাতারে হওয়া যুদ্ধবিরতি কতটা স্থায়ী হয় তাই এখন দেখার বিষয়।





