অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও সমালোচনার মুখোমুখি জাতিসংঘ। ট্রাম্পের পর সংস্থাটির কার্যকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও। যারা যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য শুধু বিবৃতি ছাড়া জাতিসংঘ আর কি করছে, এমন প্রশ্ন তুলে কটাক্ষ করেন জেলেনস্কি।
এমনকি ন্যাটোর নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয়ার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন জেলেনস্কি। উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি পোল্যান্ডসহ ন্যাটোর ৪টি সদস্য রাষ্ট্রে রাশিয়ার ড্রোন ও যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের ঘটনাকে সামনে আনেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলমান সামরিক জোটের অংশ থাকা সত্ত্বেও আপনি নিরাপদ নন। সম্প্রতি ১৯টি রাশিয়ান ড্রোন পোলিশ আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন নয় বরং অস্ত্রই পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধান। এমনকি ইউক্রেন ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য রাশিয়া হুমকি হয়ে উঠছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। এরজন্য এখনই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে থামানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিস্ফোরক মন্তব্যে জেলেনস্কি এও বলেছেন যে, যদি কোনো দেশ শান্তি চায়, তাহলেও তাকে অস্ত্র নিয়ে কাজ করতে হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দী অতীতের থেকে খুব বেশি আলাদা নয়। যদি কোনও জাতি শান্তি চায়, তবে তাকে এখনও অস্ত্র নিয়ে কাজ করতে হবে। এটিই এখন বাস্তবতা। আন্তর্জাতিক আইন নয় বা সহযোগিতা নয়, অস্ত্রই নির্ধারণ করে কে আসলে টিকে থাকবে।’
এদিকে গত জুনে ইরানে চালানো যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের আক্রমণ ‘বর্বর আগ্রাসন’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। গাজা, লেবানন, ইয়েমেনে চলমান ইসরাইলি হামলারও কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘গত জুনে আমাদের ভূখণ্ডে ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা কূটনীতির প্রতি গুরুতর বিশ্বাসঘাতকতা এবং স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতি নাশকতা ছিল। এই স্পষ্টতই আগ্রাসন। এতে অসংখ্য কমান্ডার, নাগরিক, শিশু, নারী এবং দেশের বৈজ্ঞানিকদের জীবন কেড়ে নিয়েছিল। যা আন্তর্জাতিক আস্থা এবং আঞ্চলিক শান্তি সম্ভাবনার উপর মারাত্মক আঘাত এনেছিল।
জাতিসংঘের ভাষণে তিনি জোর দাবি করে বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো ইচ্ছা পূর্বেও ছিলো না, ভবিষ্যতের জন্যও নেই।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আবারও, আমি এ সমাবেশে ঘোষণা করছি যে ইরান কখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করেনি, করছে না এবং করবে না। আমরা কখনও গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করিনি এবং করবও না।’
জাতিসংঘে চলমান দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনের যে ৩০টির বেশি দেশের দেশের সরকার প্রধান বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে আলোচিত ইউক্রেন, ইরান ছাড়াও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা। ৫৮বছর পর প্রথমবার সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জাতিসংঘে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারাও। এসময় বাশার আল আসাদ সরকার পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ তার সরকারকে সমর্থন দেয়া কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান শারা।
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় সকাল থেকে শুরু হওয়া সভায় সব দেশের নেতারাই গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।





