ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আকাশ, ভারী হচ্ছে বাতাস। দূষণের কড়ালগ্রাসে গতি হারাচ্ছে প্রাণ-প্রকৃতি।
এমন দৃশ্য হরহামেশা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু ঢাকার অদূরে সাভারের বায়ুদূষণের মাত্রা এতটাই বেশি যে, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এ এলাকাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ ঘোষণা করা হয়েছে।
সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিপত্রে বলা হয়, সাভারের বায়ুর বার্ষিক মানমাত্রা মারাত্মক দূষণের পর্যায়ে। নির্ধারিত মানমাত্রার ৩ গুণ অতিক্রম করায় জনস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় দেয়া হয় এমন ঘোষণা।
জনবহুল আর শিল্প-বাণিজ্যের অন্যতম হাব সাভারের বায়ু শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহিত হয়ে রাজধানীতেও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
এমন বাস্তবতায় হাঁপানি, হৃদরোগ, চর্মরোগসহ বায়ুদূষণজনিত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:
সাভারের বায়ুর নিম্নমুখী অবস্থানে দুশ্চিন্তায় এলাকার নাগরিক সমাজ। আশঙ্কা, পরিবেশের এমন পরিস্থিতি শুধু স্বাস্থ্যের ওপরই নয়, নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এখানকার অর্থনৈতিক খাতেও। এ থেকে উত্তরণে দূষণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ তাদের।
গবেষণা বলছে, সাভারের বায়ুদূষণের জন্য অবৈধ ইটভাটা দায়ী ২৮ শতাংশ। আইকিউ এয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, শূন্য থেকে ৫০ স্কোর পর্যন্ত বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হলেও সাভারে তা ৮৫ এর ওপর থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়ই।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের দাবি, জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে শিগগিরই দূষণ বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।
সরকারি পরিপত্র ঘোষণার পর, কী উদ্যোগ পরিবেশ অধিদপ্তরের?— এমন প্রশ্নে অধিদপ্তর বলছে, দূষণের উৎসগুলো বন্ধে শিগগিরই কাজ শুরু হবে। পরিবেশ ছাড়পত্র না দেয়া ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইটভাটা বন্ধসহ মোটাদাগে তিনটি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নেরও আশ্বাস তাদের।
সমন্বিত উদ্যোগে কি ব্যাপক দূষণ থেকে মুক্ত হবে সাভার, নাকি ডিগ্রেডেড এয়ারশেড হিসেবে যুক্ত হবে নতুন কোন এলাকা?— এমনসব প্রশ্ন নিয়ে জনস্বার্থ বিবেচনায় হয়তো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই সময়।




