সিলেট বিমানবন্দরের নতুন কার্গো টার্মিনাল চালু শিগগিরই

সিলেট বিমানবন্দরের নতুন কার্গো টার্মিনাল চালু শিগগিরই | এখন টিভি
0

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে পণ্য রপ্তানি করতে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক কার্গো টার্মিনাল। বহু কাঙ্ক্ষিত সেই কার্গো টার্মিনাল চালু হবে দুই-এক মাসের মধ্যেই। তবে সিলেটে অনুমোদিত ওয়্যারহাউসে প্যাকেজিং ব্যবস্থা না থাকায় পণ্য রপ্তানি নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা।

সিলেট বিভাগ জুড়েই নানান জাতের সবজি ও সাইট্রাস জাতীয় ফলের উৎপাদন ব্যাপক। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি এসবের চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসী বাঙালিদের কাছে। এছাড়া দেশিয় কুটির শিল্পের বিশাল বাজার রয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনাল না থাকায় এতদিন রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতেন ব্যবসায়ীরা। যাতে সময় ও বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপছিল রপ্তানিকারকদের উপর। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।

এরই প্রেক্ষিতে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটে নির্মাণ করা হয়েছে কার্গো টার্মিনাল। প্রায় ১০০ টন পণ্য ধারণ ক্ষমতার অত্যাধুনিক কার্গো কমপ্লেক্সের কাজও প্রায় শেষ। বসানো হয়েছে এক্সক্লুসিভ ডেডিকেশন সিস্টেম স্ক্যানার মেশিনও। সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই এই কার্গো টার্মিনাল উদ্বোধনের কথা জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর কবির ভুঁইয়া বলেন, 'ঢাকা থেকে শুধু আমাদের কার্গোগুলো যায়। ঢাকার উপরে চাপ বেশি পড়ে। আমরা যদি সিলেট থেকে একটা শুরু করতে পারি তাহলে আমাদের চাপ করে যাবে। এবং এই এরিয়ার যত লোড আছে আমরা পাঠাতে পারবো। এই পরিকল্পনায় আমরা এগিয়ে যাই। আমরা অলমোস্ট শেষ পর্যায়ে আছি। এই মাসের শেষের দিকে, না হলে সামনের মাসের প্রথম সপ্তাহে আমাদের অপারেশন শুরু হবে।'

কার্গো কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হলেও এখনও গড়ে ওঠেনি প্যাকেজিং ব্যবস্থা। ফলে রপ্তানি নিয়ে কিছুটা সন্দিহান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, প্যাকেজিং ব্যবস্থা না থাকলে সিলেটে থেকে পণ্য রপ্তানি করতে সময় ও খরচের পরিমাণ বাড়বে।

এমসিসিআই সভাপতি আব্দুল জলিল জব্বার বলেন, 'প্যাকেজিং সিস্টেম করে কতদিন ভালো থাকবে সে বিষয়ে ল্যাব থাকতে হবে। এগুলো না থাকলে, প্যাকেজিং সিস্টেম চালু না করা হলে রপ্তানি করা কঠিন হবে। ঢাকা থেকে, হয়তো সিলেট এনে রপ্তানি করার ব্যবস্থা করতে পারে সরকার। কিন্তু রপ্তানিকারকরা ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত যে ক্যারিং খরচ অতিরিক্ত পড়বে এতে কেউ রপ্তান করতে চাইবে না।'

এসসিসিআই সাবেক সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, 'যেহেতু ওয়্যারহাউজ রেডি এবং সময় এসেছে এবং এর চাহিদাও আছে। অন্ততপক্ষে পণ্য পরিবহণটা যদি আরম্ভ করা হয় তাহলে ওয়্যারহাউজটা অ্যাক্টিভ হবে, আমাদের ব্যবসায়ীদের কাজ করতে সুবিধা হবে। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে প্যাকেজিং সিস্টেমটা যেন চালু হয়।'

যদিও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, কৃষি পণ্য রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরা যেন সুফল পান সে বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ বলেন, 'প্যাকিং হাউজের বিষয়টা আসলে কৃষি মন্ত্রণালয়ে। তারা দেখছেন বিষয়টা। প্যাকিং হাউজের মাধ্যমে শুধু কৃষিপণ্য ইউরোপে পাঠানোর ক্ষেত্রে পাঠানোয় সুবিধা হবে। এছাড়া অন্য সব জায়গায় পাঠানোর সুবিধা কিন্তু আমাদের আছে।'

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্যাকেজিং হাউস তৈরি হলে সিলেট থেকে বছরে অন্তত আড়াইশ' কোটি টাকার কৃষিপণ্য রপ্তানি করা সম্ভব যা এখন শূন্যের কোঠায়।

এসএস