জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী আরও গরম ও শুষ্ক হয়ে উঠছে। এ কারণে অসময়েও দানবীয় রূপ নিচ্ছে দাবানল। যার চাক্ষুষ সাক্ষী যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা দাবানলের এই লেলিহান শিখা।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে টানা ৫ দিন ধরে লড়াই করেও এই আগুন ঝড়কে থামাতে পারছেন না হাজার হাজার দমকল কর্মী। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া এলাকাগুলো দেখলে মনে হবে, কোনো এক যুদ্ধে পুরোপুরি নিঃশেষ আর ধ্বংস হওয়া নগরী এটি।
অথচ সাজানো গোছানো লস অ্যাঞ্জেলেসের এসব এলাকাগুলোতে দৃশ্য ধারণ করে তৈরি হয় হলিউড কাঁপানো সিনেমা। বিনোদন আবহে সারাদিন হই-হুল্লোড় করে বেড়ানো নগরীর আনাচে কানাচে এখন তাড়া করছে আতঙ্ক।
নজিরবিহীন দাবানলের হাত থেকে কখন রেহাই মিলবে, সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছে মানুষ। তবে আপাতত কোনো ভালো খবর নেই বাসিন্দাদের জন্য। যেসব এলাকায় এখনও আগুন পৌঁছায়নি তাদের জন্যও দুঃসংবাদ দিলেন লস অ্যাঞ্জেলেসের জলবায়ু বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল সোয়েন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে প্যালিসেডস থেকে দাবানল পূর্ব-দিকে এগুচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ঝড়ো হাওয়াসহ দাবানল পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী ড. ড্যানিয়েল সোয়েন বলেন, ‘আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে আমাদের আরও একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার শঙ্কা রয়েছে। সম্ভবত এই সপ্তাহের শেষের দিকে আরও একটি উচ্চ পর্যায়ের দাবানলের ঘটনা ঘটবে।’
সান্তা আনা বাতাসের তীব্রতা বাড়ার বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে। ভেনচুরা কাউন্টিতে ১৪ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত দাবানল বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
ড. ড্যানিয়েল সোয়েন বলেন, ‘আমরা আরেকবার সান্তা আনা ঝড়ের কবলে পড়তে যাচ্ছি। যদিও এবার খুব বেশি শক্তিশালী হবে না বলে মনে হচ্ছে, তবে বিপদ বাড়াতে পারে।’
অলৌকিক এই দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে সবাইকে সরিয়ে নেয়ার পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। তবে দাবানলের ভয়াবহতা বিবেচনায় মৃতের সংখ্যা অনেক বাড়ার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।