জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে দরকার প্রতিদিন ১০০ কোটি ডলার

0

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। অথচ মিলছে মাত্র সাড়ে ৭ কোটি ডলার। ধরিত্রীকে রক্ষায় আজারবাইজানের বাকুতে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের প্রায় ২শটি দেশের প্রতিনিধি। জাতিসংঘ বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলনের সভাপতির কণ্ঠে ছিল বিশ্বকে বাঁচানোর আহ্বান। সঙ্গে নিজ নিজ দেশ দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্যে হলেও ক্লাইমেট ফাইনান্সের ওপর জোর দিয়েছেন বক্তারা।

জাতিসংঘের বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলনের এবারের আসর শুরু হলো এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান নেতার নির্দেশে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার এখন সময়ের বিষয় মাত্র।

এমন পরিস্থিতিতে ধরিত্রীকে রক্ষায় আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের প্রায় ২শটি দেশের প্রতিনিধি। কপ-টোয়েন্টি নাইন সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বার্ষিক অর্থ বরাদ্দ নির্ধারণ। পাশাপাশি বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে বেধে রাখার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।

উদ্‌বোধনী দিনে সম্মেলনের সভাপতির দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় মুখতার বাবায়েভকে। আজারবাইজানের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী জানান, বর্তমান নীতি অনুসরণ করলে বছরে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়বে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে, যা মানবজাতিকে বিলুপ্ত করতে যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাই সহানুভূতির বদলে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন সভাপতি।

কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট মুখতার বাবায়েভ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছেন। সহানুভূতি, দোয়া কিংবা পেপার ওয়ার্কের চেয়েও তাদের বেশি কিছু প্রয়োজন। তারা আমাদের নেতৃত্ব ও পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন। কপ-২৯ সম্মেলনই নতুন দিনের সূচনা করতে পারে।’

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবে ২০২৪। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। অথচ পাচ্ছে মাত্র সাড়ে ৭ কোটি ডলার। ক্লাইমেট ফাইনান্সকে দাতব্য কাজ হিসেবে মনে করাও অযৌক্তিক হিসেবে দাবি করা হয় জাতিসংঘের পক্ষ থেকে।

ইউএনএফসিসিসি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সিমোন স্টেইল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অর্থ বরাদ্দকে দাতব্য কাজ হিসেবে মনে করা থেকে সরে আসতে হবে। এই খাতে বরাদ্দ করলে প্রতিটি দেশের স্বার্থ রক্ষা হবে। সেটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় কিংবা ধনীর দেশের জন্যেও প্রযোজ্য। শুধু লক্ষ্য নির্ধারণ করলেই হবে না। সে অনুযায়ী কাজও করতে হবে।’

বর্তমানে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ১ দশমিক ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে বিশ্ববাসী। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিবের দাবি, বাস্তবসম্মত নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাপমাত্রাকে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব। দুই সপ্তাহব্যাপী জলবায়ু সম্মেলন শেষ হবে ২২ নভেম্বর।

ইএ