উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ভোট ভাগ হয়ে যাচ্ছে কামালা-ট্রাম্পের!

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আগে মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ক্রমেই মুসলিম ভোটারদের সমর্থন কমছে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিসের। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবর্তে এ ভোট যাচ্ছে তৃতীয় দলের ঝুলিতে। এতে ব্যাটল গ্রাউন্ডস খ্যাত অঙ্গরাজ্যগুলোতে ট্রাম্পের চেয়ে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন কামালা। অন্যদিকে, অভিবাসীদের গলাধাক্কা দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

বিশ্ব রাজনীতিতে পরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি এক মাসেরও কম সময়। জরিপে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থান প্রায় সমান। ৯৭ শতাংশ জনসমর্থন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে। বাকি ভোটের মাত্র এক শতাংশ গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনের হলেও ভোটযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোকে সমর্থন বাড়ছে তার, যার ফলে ভোট ভাগ হয়ে যাচ্ছে কামালা ও ট্রাম্পের।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ও লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনে মার্কিন সমর্থনের জেরে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষোভ বাড়ছে আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও মুসলিম ভোটারদের মধ্যে। ক্ষমতাসীন বলে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালাকে এই ক্ষোভের মাশুল গুণতে হতে পারে বলে মনে করছেন জিল স্টেইন। আপাতদৃষ্টিতে জিলের ভোট বিবেচনায় না নিলেও, কামালার ভোটের সামান্য অংশও যদি জিলের ঝুলিতে পড়ে, তাহলে ট্রাম্পের তুলনায় পিছিয়ে পড়তে পারেন কামলা। যদিও মন্দের তালিকায় কেউ কারও চেয়ে কম নন বলে মন্তব্য জিলের।

জিল স্টেইন বলেন, 'মিশিগান, অ্যারিজোনা, মিনেসোটা, উইসকনসিন, জর্জিয়াসহ সুইং স্টেটসগুলোতে ডেমোক্র্যাটদের ভোট যে ঝুঁকিতে, বহু জরিপে তা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। ডেমোক্র্যাটদের ভোট ঝুঁকিতে কারণ তারা মার্কিন মুসলিম আর আরব-মার্কিনদের ভোট হারাচ্ছে।'

২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাটলগ্রাউন্ড খ্যাত এসব রাজ্যে বড় অংশের ভোট ছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে, অর্থাৎ ডেমোক্র্যাট শিবিরে।

এদিকে, এবারের অন্যতম ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য উইসকনসিনে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের রোববারের প্রচারণায় আবারও উঠে আসে অভিবাসী বিরোধিতা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'সারাবিশ্বে অপরাধপ্রবণতা কমছে কারণ তারা তাদের অপরাধীদের, কয়েদিদের, মাদক পাচারকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের পাঠিয়ে দিচ্ছে। এদের নিয়ে আটকে গেছি আমরা। কিন্তু আর আটকে থাকবো না। তাদের গলাধাক্কা দিয়ে ফেরত পাঠাবো। তাদের এ দেশে ঢুকতে দেয়াই কখনও উচিত হয়নি।'

অন্যদিকে, নির্বাচনী প্রচারণায় দু'দলের অন্যতম ইস্যু গর্ভপাত প্রসঙ্গে কামালাকে কী সমর্থন দিলেন ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া? উঠছে এমন প্রশ্ন। গর্ভপাত প্রশ্নে ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন জানিয়ে ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন ফার্স্টলেডি বলেন, ব্যক্তিগত বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ তিনি চান না।

মেলানিয়া ট্রাম্প বলেন, 'প্রথম পরিচয়ের দিন থেকে ট্রাম্প আমার অবস্থান ও আমার বিশ্বাস সম্পর্কে জানেন। আমি ব্যক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমার শরীর সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত আমি নিতে চাই। আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ আমি চাই না।'

নারীদের গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে সোচ্চার কামালা হ্যারিস। বিপরীতে ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টে গর্ভপাতের অধিকার বিষয়ক মামলার রায় উল্টে দেয়ার পেছনে নিজের ভূমিকা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তবে জরিপে কামালার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসে মধ্যপন্থি ও স্বাধীন ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় সম্প্রতি গর্ভপাত ইস্যুতে ভিন্ন সুর ট্রাম্পের।

এসএস