২০২১ এর শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক শুরু থেকেই। তবু বিগত সরকারের ২ শিক্ষামন্ত্রী এটি বাস্তবায়নে ছিলেন অনড়। চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৭টি শ্রেণিতে সেই শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবই পড়ানো হচ্ছে।
এরমধ্যেই পট পরিবর্তন। আগস্ট-জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার সরকারের পতন। অন্তর্বর্তী সরকারের নেয় রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব। সেই ঢেউ লাগে শিক্ষা খাতেও।
শিক্ষার সীমাহীন দুর্নীতি আর বৈষম্যকে দূর করতে কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে যেই পাঠ্যবই নিয়ে ছিল সবচেয়ে বেশি বিতর্ক, সেটি পরিমার্জনে সবার আগে হাত দেয় সরকার।
এ অবস্থায় শনিবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, অনেক শিক্ষক নিজেই কারিকুলাম বোঝেন না। বুঝতে চেষ্টাও করেন না। সেটা থেকে যেমন বের হতে হবে, তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জন্য বৈষম্য ও নিপীড়ন মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর'র অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, 'শিক্ষকদের একটা সমস্যা হচ্ছে তারা কারিকুলাম বুঝে না। এছাড়াও শিক্ষকরা কারিকুলামের মূল যে উদ্দেশ্যে সেটা না বুঝে বাস্তবায়ন করতেছে। আর পৃথিবীর এমন দেশ খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে প্রিরি সাফিক্স এডুকেশন নাই। কিন্তু আমাদের দেশে এটা চলে আসছে এখনই উচিত এটা বন্ধ করা।'
শিক্ষকদের বেতন কাঠামোসহ অন্যান্য বৈষম্য নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে বলেন, সরকারি ব্যায়ের অপচয় ও দুর্নীতি কমানো গেলে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হবে। সরকার সেটা নিয়ে কাজ করছে। শিক্ষার বৈষম্যই অর্থনৈতিক বৈষম্যের মূল কারণ বলে মনে করেন তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন,'মানসম্মত মৌলিক শিক্ষার যে অধিকার সেখানে যদি বৈষম্য থাকে। তাহলে সেটা বংশানুক্রমিক চলতে থাকে।'
আগামী শিক্ষাবর্ষে শুরুতে শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়ার বাধ্য বাধকতার কারণে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই পাঠ্যবইয়ের সংস্কার করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। এটির আরও সংস্কারের প্রয়োজন আছে এবং পরে আরও সংস্কার করা হবে। বলেন, ছাত্র আন্দোলনের পর পাঠ্য বইয়ে নতুন ইতিহাসের পর্বগুলোও স্থান পাওয়া দরকার।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, 'দেশের উপযোগী জাতীয় শিক্ষানীতি তো দূরের কথা আমরা অন্তবর্তী সরকার এসে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়েছি। আন্দোলনের প্রক্ষাপটে স্কুলের পাঠ্যবই গুলোতে নতুন দেশ গড়ার একটা প্রত্যয় প্রতিফলিত হওয়া অবশ্যই দরকার।'
বক্তারা বলেন, 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যেন দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।'