সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক শ্রমিক নিহতের পর আজ (মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর) সকাল থেকেই অস্থিরতা শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায়। নবীনগর-চন্দ্রা মহসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন পোশাক শ্রমিকরা।
বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে আশুলিয়ার বার্ডস গ্রুপের পোশাক কারখানার প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার শ্রমিক সড়ক অবরোধ করেন। এতে সহিংসতার ঘটনায় বন্ধ রাখা হয় ১৪টি কারখানা। তবে অন্যান্য কারখানা সচল রয়েছে। তবে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ শ্রমিক নেতাদের।
সাভারের একজন শ্রমিক বলেন, '৩০ সেপ্টেম্বর টাকা দেয়ার কথা থাকলেও নতুন করে নোটিশ দিয়ে বলেছে ৩ মাস পর দিবে।'
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা শ্রমিক অসন্তোষে অর্ডার হারাচ্ছে পোশাক কারখানাগুলো। ক্ষতির মুখে পড়ছে এই খাত।
কমপ্লাইন্স এন্ড এডমিশন উইন্টার ড্রেস লিমিটেডের এইচ আর ডাইরেক্টর লে. এম এস জোবায়ের বলেন, 'শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ক যদি ভালো হয় এবং যার যার জায়গা থেকে কাজ করি তাহলে আমাদের পোশাক শিল্পের পরিবেশ ভালো হবে।'
এদিকে অবরোধ করায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের দু'পাশে তৈরি হয় তীব্র যানজট। যাতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এদিকে, সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখার একপর্যায়ে পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সাভারে যাত্রীদের একজন বলেন, ‘আমরা বাস পাচ্ছি না অটো রিকশাতে যাতায়াত করছি।’
একই পরিস্থিতি গাজীপুরেও। বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগরা এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা। মহাসড়কের দু'পাশ বন্ধ করে শুরু হয় বিক্ষোভ। এতে স্থবির হয়ে পড়ে মহাসড়কের যানচলাচল। তীব্র যানজটে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন।
শ্রমিকরা জানান, তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী টিএনজেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এ্যাপারেল প্লাস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত ১৬ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করেন। ১৭ জুলাই বিনা নোটিসে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। পরে জুন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করলেও জুলাই মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, গত সোমবার আশুলিয়ায় পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের বিষয়ে শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের নামে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি অস্থির করা হচ্ছে।’
শ্রমিকদের দিক থেকেই আগে গুলি ছোঁড়ার দাবি করেন শ্রম উপদেষ্টা। আর যেসব মালিকরা এখনও পর্যন্ত বেতন দিচ্ছেন না তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর পোশাক শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা বাড়ানোসহ শ্রমিকদের ১৮টি দাবি মেনে নেয় সরকার। সকল পোশাক কারখানা চালুর ঘোষণা দেয়া হয়।