ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

যুদ্ধ থামাবেন ট্রাম্প!

আগামী নির্বাচনে জিতলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত বন্ধ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতে ট্রাম্প দাবি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই তিনি নিজে উদ্যোগ না নিলে এ যুদ্ধের অবসান হবে না। এদিকে, জেলেনস্কি জানান, চলমান সংঘাতে পুতিন কখনই জয়ী হতে পারবেন না- এ বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা।

কুরস্ক অভিযানের ধাক্কা সামলে সীমান্তে হামলা জোরদার করেছে পুতিনের সেনাবাহিনী। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ওডেসার দক্ষিণে একটি গ্রামে পরপর বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া। দিনিপ্রো শহরের একটি কারখানায় চালানো হয় মিসাইল হামলা। এসব হামলায় মূলত ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করা হলেও রাশিয়ার ছোড়া ৩২টি ড্রোনের ২৪টিকে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা।

কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কোর আগ্রাসী মনোভাব যখন তুঙ্গে ঠিক তখন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে জয়ের রোডম্যাপ নিয়ে জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তব্য দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সম্মেলনের ফাঁকে দেখা করছেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যসহ আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী কামালা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথেও। চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়টি অনেকাংশেই নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। তাই চলমান অস্থিরতার মধ্যে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের দিকে নজর ছিল গণমাধ্যমের।

ট্রাম্প-পুতিন সম্পর্ক নিয়ে বরাবরই ইতিবাচক অবস্থানে রিপাবলিকানরা। নির্বাচনী প্রচারে অসংখ্যবার জেলেনস্কি প্রশাসনের যুদ্ধনীতির কড়া সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবারের বৈঠকের আগে ট্রাম্প আশ্বাস দেন, আবারও নির্বাচিত হলে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন তিনি। বলেন, চলমান সংঘাতে ইউক্রেন বিজয়ী হলে তা ওয়াশিংটনের জন্যও বড় অর্জন হিসেবে গণ্য হবে।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, 'ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। আপনারা জানেন, ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথেও আমার সম্পর্ক বেশ ভালো। নির্বাচনে জিতলে খুব দ্রুত আমরা ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের সমাধান করে ফেলবো। আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, আমরা চাইলেই পারবো'।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, 'আপনার সাথে আমি ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে আলোচনা করতে চাই। এই ইস্যুতে আমাদের অবস্থান এক। আমরা দু'জনেই বিশ্বাস করি ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত। পুতিনের পক্ষে বিজয়ী হওয়া সম্ভব না। বিজয় অর্জনে আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে আপনার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে এসেছি'।

জেলেনস্কি বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস- দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সাথে আলাদাভাবে বৈঠক করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল তার কাছে। নভেম্বরে মার্কিন নাগরিকরা তাদের রায় জানাবেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত পুতিন বসে থাকবে না। কাজেই, রুশ প্রেসিডেন্টকে থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন'।

তবে, ইউক্রেনে সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি ট্রাম্প। বরং কয়েকদিন আগে জেলেনস্কিকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প বলেছিলেন, জেলেনস্কি পৃথিবীর সবচেয়ে চতুর সেলসম্যান। ফলে শুক্রবারের বৈঠকের পর ট্রাম্পের আস্থা অর্জনে কতটা সফল হলেন জেলেনস্কি- সেদিকেই নজর পশ্চিমা বিশ্বের।