উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

ট্রাম্পের হুমকি নিয়ে প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ট্রুডো

ট্রাম্পের শুল্কনীতির হুমকি নিয়ে কানাডার প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিষয়টি নিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নেতারা। মার্কিন পণ্যের উপর প্রতিশোধমূলক শুল্কারোপের প্রস্তাব দেন কানাডিয়ান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক কীরূপ হবে তাও উঠে এসেছে তাদের বৈঠকে।

মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব ও আবাসন খাতে বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দিন দিন জনপ্রিয়তা হারাতে থাকেন তিনি। খালিস্তানপন্থী নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছায়।

কানাডিয়ান পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যে যুক্ত করার হুঁশিয়ারি দেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই নিজ দলের তোপের মুখে পড়েন ট্রুডো। একই ঘটনায় মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেন ট্রুডোর আস্থাভাজন দেশটির অর্থমন্ত্রী খ্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। যা ট্রুডোকে আরও কোণঠাসা করে ফেলে।

বছরের শুরুতেই পালাবদলের হাওয়া লাগে কানাডার রাজনীতিতে। ঘরে-বাইরে দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো।

এবার বিদায়বেলায় মার্কিন শুল্কনীতি নিয়ে ১০টি প্রদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রুডো। এ সময় তিনি জানান, শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট চায় না কানাডা।

জাস্টিন ট্রুডো বলেন, 'দেশের কোনো অঞ্চলের বাসিন্দাদেরই অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো উচিত হবে না। এ বিষয়ে প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সারাদেশে ন্যায্যতার ভিত্তিতে করারোপের বিষয়ে একমত হয়েছেন সবাই। ট্রাম্পের শুল্কনীতি মার্কিন জনগণের পাশাপাশি কানাডিয়ানদেরও ক্ষতির মুখে ফেলবে।'

কানাডার ভবিষ্যতের জন্য যা দরকার তার সবকিছুই করবেন বলে জানান ট্রুডো। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ট্রুডো জানান, আগামী নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এই মুহূর্তে দেশের অর্থনীতি ও জনগণকে নিয়েই ভাবছেন।

জাস্টিন ট্রুডো বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের জোরালো প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। তবে আমাদের প্রতিক্রিয়ার ধরণ কেমন হবে তা নির্ভর করছে মার্কিন নতুন প্রশাসন কানাডার বিরুদ্ধে কী সিদ্ধান্ত নেয়। কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক বসালে মার্কিন গ্রাহকদেরও অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে।'

চলমান ঘটনায় কানাডার রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকজন ব্যবসায়ী মার্কিন পণ্যের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেন। এছাড়া শুল্কনীতি বাধাগ্রস্ত করতে যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে ট্রুডোর প্রতি আহ্বান জানান প্রাদেশিক নেতারা। জাতীয় ঐক্য গড়ার বিষয়েও প্রস্তাব উঠে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা একে অপরের শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার। কানাডার সরকারি পরিসংখ্যান তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য লেনদেন হয়েছে।

এসএস