ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গ্রাম গোমড়া। এই গোমড়া গ্রামই বর্তমানে পরিচিত কাঁকরোল গ্রাম হিসেবে। এ গ্রামের প্রায় ১ হাজার ২০০ কৃষকের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে কাঁকরোল চাষ করে। একটা সময় যে এলাকায় পতিত পড়ে থাকতো জমি সেখানে বর্তমানে বিঘার পর বিঘায় চাষ হচ্ছে কাঁকরোল।
একজন কৃষক বলেন, 'আমরা এই এলাকার প্রায় সবাই কাঁকরোল চাষ করি। এই কাঁকরোলের মাধ্যমেই আমরা লাভবান। এরপর শিম লাগাবো, তারপর আবার সেই কাঁকরোলই।'
কাঁকরোলের বীজ দেখতে মিষ্টি আলুর মত। মার্চ ও এপ্রিলে এই সবজির চাষ করা হয়। চারা গজানোর ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যায়।
কাঁকরোল চাষে বিঘাতে খরচ হয় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। কৃষকরা বলছেন, ফলন ও দাম ভালো হলে বিঘা প্রতি খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে লাখ টাকার উপরে।
একজন চাষি বলেন, 'কাঁকরোলে লাভ বেশি। সার কম লাগে, পরিশ্রমও কম করতে হয়। সেজন্য সবাই কাঁকরোল চাষে আগ্রহী হচ্ছে।'
পুষ্টিকর সবজি কাঁকরোলে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, ক্যারোটিন, আমিষ, ভিটামিন এ, বি ও সি এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো থেকে শুরু করে ত্বক উজ্জ্বল করা এমনকি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে এই সবজি।
কাঁকরোল চাষীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার। তিনি বলেন, 'এই সবজি কৃষক সরাসরি ঢাকার বাজারে পাঠিয়ে দেয়। তারা লাভবান হচ্ছে। আমি মনে করি অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকরা জমি ফেলে না রেখে এই মৌসুমে এসব সবজি আবাদ করলে লাভবান হবে।'
এবছর ঝিনাইগাতী উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে কাঁকরোলের চাষ হয়েছে।