গ্রিনহাউজ গ্যাস ও কার্বন নিঃসরণে গোটা পৃথিবীতে বাড়ছে উষ্ণায়নের ভয়াবহতা। ২০২৩ সালের পর টানা দ্বিতীয়বার উষ্ণতম বছরের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ২০২৪। গেল জুনের পর ইতিহাসের উষ্ণতম আগস্টের সাক্ষী হয়েছে বিশ্ববাসী। শুধু বায়ুমণ্ডল কিংবা ভূপৃষ্ঠ নয়, তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠেও। পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত অ্যামাজন বনে থাকা নদীগুলোর পানির স্তরও ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে।
এ অবস্থায় জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব আরও ঘনীভূত হচ্ছে। দেশে দেশে হানা দিচ্ছে দাবানল, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও। তাই বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অ্যামাজন রেইনফরেস্ট সংরক্ষণ করা জরুরি হয়ে উঠেছে বলে একমত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ অ্যামাজন সংরক্ষণ সংস্থার নতুন এক গবেষণা তথ্যে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে বলা হয়, অ্যামাজনের ৪০ শতাংশ এলাকাই অরক্ষিত রয়েছে।
অঞ্চলগুলো পেরুর দক্ষিণ-পশ্চিম এবং ব্রাজিল, ফ্রেঞ্চ গুয়ানা ও সুরিনামের সুদূর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। অ্যামাজনের এই অংশগুলোতে সবচেয়ে বড় ও ঘন গাছ রয়েছে। এর অর্থ হল, অঞ্চলগুলো সর্বাধিক কার্বন ধারণ করে। সুরক্ষার মাত্রা কম থাকা এসব অঞ্চলগুলোকে ৫১ শতাংশ পিক কার্বন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অ্যামাজন সংরক্ষণ সংস্থা মনিটরিং প্রকল্পের প্রধান ম্যাট ফাইনার বলেন, 'আমাজনের যে অংশগুলো সবচেয়ে ঘন ও বড় গাছ রয়েছে, সেখানে উচ্চ কার্বনের পরিমাপ পাওয়া যাচ্ছে। পিক কার্বন অঞ্চলে থাকা জমির ব্যবহার এবং সেই শীর্ষ কার্বন অঞ্চলে কী ঘটছে তা দেখেছি। প্রকৃতপক্ষে সংরক্ষিত এলাকা এবং আদিবাসী অঞ্চলগুলো তুলনামূলকভাবে হুমকির সম্মুখীন।'
গত মাসে প্রকাশিত অ্যামাজন সংরক্ষণ সংস্থা'র বিশ্লেষণ তথ্যে দেখা যায়, পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত এই বনটিতে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টন কার্বন রয়েছে। যা ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের প্রায় দ্বিগুণ। এমনকি এও দাবি করা হয় যে, ২০২২ সাল পর্যন্ত এক দশকে কার্বন নির্গমনের চেয়ে শোষণে বেশি ভূমিকা রেখেছে অ্যামাজন। যা জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় একটি ইতিবাচক দিক। তবে অন্যান্য গবেষণায় এ নিয়ে বিতর্কও আছে।