নির্বাচনের বাকি নেই দু'মাসও। এর মধ্যেই বিভিন্ন জনমত জরিপে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন কামালা, তাতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে ট্রাম্প শিবিরে। যদিও নির্বাচনের ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বীকে টেক্কা দিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই যে অবধারিত, সে বাস্তবতা মানতে নারাজ ট্রাম্প।
নির্বাচনী প্রচারণা যখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখনই অনেকটা দেরিতে প্রচারে নামা ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস ব্যবধান প্রায় ঘুচিয়ে এক কাতারে পৌঁছেছেন রিপাবলিকান প্রার্থীর সঙ্গে। নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত জাতীয় জরিপ বলছে, মাত্র এক শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে ট্রাম্প। একইদিন প্রকাশিত সিবিএস বা ইউগভ জরিপে সুইং স্টেটসগুলোতে এক থেকে দুই শতাংশ এগিয়ে কামালা।
এমন পরিস্থিতিতেই নির্বাচনে জালিয়াতির শঙ্কা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জেলে ঢোকানোর হুমকি দিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ২০২০ সালের নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে হেরে বিদায় নেয়ার পরেও ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন এই রিপাবলিকান নেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘কিভাবে বাইডেন জিতেছিলেন, কোনোদিন জানতে পারবো না। আমার জীবনে এটা অন্যতম অলৌকিক ঘটনা। ১৪০ কোটি ভোট পেলেন, জিতলেন, প্রেসিডেন্ট হলেন। ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট তিনি। কামালা তার চেয়েও খারাপ। ট্রাম্প কখনো ভুল বলে না, আমি ভুল বলি না।’
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম চিরশত্রু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কামালাকে দেখতে চান বলে মন্তব্য করায় 'অপমানিত' বোধ করছেন বলে জানান ট্রাম্প। অন্যদিকে নিজ দল রিপাবলিকান পার্টিতেও ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রবীণ রিপাবলিকান নেতা ও ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বুশ প্রশাসনের আমলে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করা ডিক চেনি আর তার মেয়ে সাবেক আইনপ্রণেতা লিজ চেনি ট্রাম্পের বদলে সমর্থন দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কামালাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা লিজ চেনি বলেন, ‘আমি কোনোদিন কোনো ডেমোক্র্যাট নেতার পক্ষে ভোট দিইনি। কিন্তু এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের জন্য হুমকি। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছিলেন। আমার দৃষ্টিতে তিনি অপূরণীয় ক্ষতি আর বিপর্যয়ের প্রতিমূর্তি। তার পুনঃনির্বাচিত হওয়া ঠেকাতে সাধ্যের মধ্যে যা করা সম্ভব, সব করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কামালা হ্যারিস বলেন, ‘আমি এই সমর্থন পেয়ে সম্মানিত বোধ করছি। এই মুহূর্তে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পদক্ষেপ। অনেক কিছু ঘটছে। অনেকের সাথেই কথা বলে জানতে পেরেছি বিভাজন আর মার্কিনদের মধ্যে ট্রাম্পের বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টায় মানুষ কতটা ক্লান্ত।’
নির্বাচন সামনে রেখে টেলিভিশন বিতর্কে মঙ্গলবার প্রথম এক মঞ্চে মুখোমুখি হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কামালা হ্যারিস। আর্থ-রাজনৈতিক বহুমুখী সংকটের মধ্যে বিশ্বের প্রতাপশালী দেশটির ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দুই নেতার বিতর্ক দেখতে মুখিয়ে আছে কোটি কোটি মানুষ।