উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

রিপাবলিকান সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে উদ্বেগ ডেমোক্র্যাট শিবিরে

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ বাকি থাকতে সারা দেশে এর মধ্যেই আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন প্রায় দুই কোটি মানুষ। সুইং স্টেটগুলোতে রেকর্ড ভাঙছে ভোটার উপস্থিতি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে রিপাবলিকান সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে ডেমোক্র্যাট শিবিরে। ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে জোর প্রচার চালাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। জাতীয় পর্যায়ের জরিপে কামালা এগিয়ে থাকলেও সুইং স্টেটস ও ইস্যুভেদে অনেক জরিপেই তাকে পেছনে ফেলছেন ট্রাম্প।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক উৎসাহদান কাজে লেগেছে বেশ। আর তাই আগাম ভোট দিতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে রিপাবলিকান সমর্থকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

একজন ভোটদাতা বলেন, 'আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিচ্ছি। কারণ তার নীতি আমার পছন্দ।'

গেলো সপ্তাহে এক পডকাস্টে আগাম ভোট দিতে ট্রাম্পের আহ্বানের পর কেন্দ্রে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরে। কামালা হ্যারিসের হয়ে প্রচারে নামা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কণ্ঠে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ছিল তেমনই ছাপ।

বারাক ওবামা বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প ৭৮ বছর বয়সী এক ধনকুবের যার নিজের সমস্যা নিয়ে কান্নার শেষ নেই। একবার সোনালী জুতো বিক্রির চেষ্টা করছেন, আরেকবার এক লাখ ডলারের ঘড়ি বেচতে চাইছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিক্রির পসরা সাজিয়ে বসে কোন প্রার্থী? কাজেই তাকে কিছুতেই নির্বাচিত হতে দেয়া যাবে না। আপানারা কামালাকে ভোট দিন। কেবল ভোটের মাধ্যমেই আপনাদের রায় শোনা যাবে।'

বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের দুই সপ্তাহ বাকি থাকতে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে এর মধ্যেই পড়ে গেছে প্রায় দুই কোটি আগাম ভোট। জর্জিয়া-নর্থ ক্যারোলাইনাসহ সুইং স্টেটগুলোতে এরই মধ্যে রেকর্ড ভাঙতে শুরু করেছে ভোটারদের উপস্থিতি। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প ব্যবসায়ী বলে বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির বিষয়টিকে হাতিয়ার বানালেও অর্থনীতির বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ অনেক ভোটার ক্ষমতায় দেখতে চান ব্যবসায়ী ট্রাম্পকেই।

স্থানীয় একজন ভোটার বলেছেন, 'আমি তাকে ভোট দিয়েছি কারণ যেন তিনি প্রেসিডেন্ট হন। এই দেশকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মতোই চালাতে হবে। আর তিনি একজন ব্যবসায়ী।'

নির্বাচনের আগে প্রচারের শেষ সময়ে এসে জরিপগুলোতে ট্রাম্প আর কামালার জনসমর্থনও ওঠানামা করছে বেশ। রয়টার্স বা ইপসোসের ছয়দিনের জাতীয় জরিপে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় সমর্থন সামান্য বেড়েছে দুই নেতারই। চার হাজারের বেশি মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত জরিপে তিন শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে কামালা হ্যারিস।

জরিপে ভোটারদের উদ্বেগের তালিকায় শীর্ষে অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি আর অভিবাসন। জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, অর্থনীতি ভুল দিকে যাচ্ছে এবং সাথে অভিবাসন নীতিমালাও- এমনটাই মত জরিপে অংশ নেয়া সংখ্যাগরিষ্ঠের। দুই ইস্যুতেই কামালাকে পেছনে ফেলেছেন ট্রাম্প। আবার রাজনৈতিক উগ্রবাদ আর গণতন্ত্রের প্রতি হুমকির প্রশ্নে কামালার প্রতি জনসমর্থন অনেকটাই বেশি, এগিয়ে আছেন গর্ভপাত আর স্বাস্থ্য নীতি ইস্যুতেও। তরুণদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা বেশি তার।

একজন তরুণ ভোটার বলেন, 'নারীদের স্বাস্থ্য অনেক বড় ইস্যু জন্য আমি কামালাকে ভোট দিচ্ছি।'

অভিবাসীদের কঠোর বাক্যবাণে বিদ্ধ করলেও নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলোকে লাতিন ভোটারদের সমর্থন আদায়ে এগিয়ে রিপাবলিকান নেতা। এ অবস্থায় লাতিন ভোটারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরির ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন কামালা।

লাতিনো ডেটা হাবের রড্রিগো ডোমিঙ্গুইজ বলেন, 'কিছু গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে শক্তিশালী নেতা হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাবার্তা এবং নেতৃত্বের ধরণ নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন নেই। লাতিন জনতার একটি বড় অংশ এরকমই।'

এদিকে নির্বাচনের আগে দলবদল আলোচিত ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। রিপাবলিকান হয়েও সম্প্রতি ট্রাম্পের বদলে কামালাকে সমর্থন জানান সাবেক আইনপ্রণেতা লিজ চেনি। বিপরীতে সবশেষ বিগত নির্বাচনের ডেমোক্র্যাট মনোনয়নপ্রত্যাশী তুলসি গ্যাবার্ড যোগ দিয়েছেন ট্রাম্পের শিবিরে।

এসএস