বিদেশে এখন
0

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দৃশ্যত কোন অগ্রগতি না থাকায় ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে পরিস্থিতি। শুধু গাজা নয়, অধিকৃত পশ্চিমতীরেও অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। পশ্চিমতীরে সেনা অভিযানে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ১১ ফিলিস্তিনির। শরণার্থী শিবিরগুলোতেও আইডিএফের হামলায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কারণে পশ্চিমতীর থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর সরে গেছে। এদিকে, লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের আগুন দেয়া জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল সাগরে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা।

অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিন, তুলকারেম, নাবলুস আর তুবাসে একযোগে চলছে ইসরাইলি অভিযান। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ার সুযোগে শুধু গাজা উপত্যকা নয়, পুরো পশ্চিমতীরে সেনা অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, অধিকৃত পশ্চিমতীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের পরিধি বাড়িয়েছে তারা। এরই অংশ হিসেবে সেনা অভিযানের পাশাপাশি চালানো হচ্ছে বিমান হামলা। ফিলিস্তিনে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর এই প্রথম এভাবে একযোগে স্থল ও বিমান হামলা চালানো হচ্ছে পশ্চিমতীরে।

ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ বলেছেন, জেনিন আর তুলকারেমে রাতভর অভিযান চলেছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে দেয়ার জন্য। কাৎজের দাবি, পশ্চিমতীরতে সন্ত্রাসমুক্ত করতে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত পশ্চিমতীরে আইডিএফ'এর অভিযানে প্রাণ গেছে অন্তত সাড়ে ছয়শ ফিলিস্তিনির।

এদিকে, শরণার্থী শিবিরে অভিযান জোরদার করায় প্রায় প্রতিদিনই গৃহহীণ ফিলিস্তিনিদের ঘুম ভাঙছে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার আতঙ্ক নিয়ে। এরইমধ্যে শরণার্থী শিবিরগুলো ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ এসেছে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাছে।

এদিকে, গাজায় চলমান বিপর্যয় আর ইসরাইলি অভিযানের কারণে উপত্যকাটিতে ত্রাণ সরবরাহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে জাতিসংঘ। সহিংসতা বাড়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ দিনদিন কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে জীবন বাঁচাতে উপত্যকাটিতে যেকোন মূল্যে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতোকিছুই হোক, গাজায় জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ করবো। মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে । কিন্তু এই সহিংসতার মধ্যে ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আমরা চরম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। ফিলিস্তিনিরা যে আমাদের সহায়তা নিরাপদে রাখবে, তাদের তো সেই জায়গাও নেই । দেইর আল বালাহ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের জায়গা, অথচ এই জায়গা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খালি করতে বলা হয়েছে। বাধ্য হয়ে আমাদের কর্মীদের এখান থেকে সরে যেতে হবে।’

এদিকে, গেলো সপ্তাহে লোহিত সাগরে যে বাণিজ্যিক জাহাজটে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়েছিল, সেটিতে এখনও আগুন জ্বলছে। জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল নিঃসৃত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে, ফলে দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা। গ্রিসের মালিকানাধীন এই জাহাজে ছিলো প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল। সহিংসতার জেরে রপ্তানিযোগ্য জ্বালানি তেল বিপর্যয়ের এই ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

tech

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর