কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অন্যান্য খাতের মত, পোশাক রপ্তানি খাতেও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে, যা এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি। গত প্রায় ২০ দিনে ১০ থেকে ১২ দিন পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধ ছিল। তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের চলমান সংকটে এসময় ক্ষতি হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা।
এছাড়াও মজুরি প্রদান, সময়মতো পণ্য রপ্তানি সময়মত করতে না পারাসহ ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বৈদেশিক মুদ্রার আয় ব্যাপকভাবে কমে যাবে। এতে বিদেশি ক্রেতারাও মুখ ফিরিয়ে নেবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পোশাকখাতসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য সংগঠনের নেতৃত্ববৃন্দরা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ বছর ব্যবসায়ীরা তাদের কথা বলতে পারে নাই। তাই সংগঠনগুলোকে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম না বানিয়ে ব্যবসায়ীক প্লাটফর্ম বানানোর আহ্বান জানান তারা।
এছাড়াও গত এক দশকে অনেক ব্যবসায়ী নিজের জন্যে এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যাস্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন সংগঠনের নেতারা। এখন আশা, সামনের দিনে সরকারে কাছে নিজস্ব কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না কেউ।
ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'আমাদের তরুণরা যে রক্ত দিয়েছে তা শুধুমাত্র দেশের স্বার্থে দিয়েছে। আমাদের সকলের মত আমরা এখন থেকে যে কাজ করবো তা দেশের স্বার্থে করবো কারো এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য না।'
আরেকজন বলেন, 'এনবিআরের নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ।'
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক নেতারা। তবে যত দ্রুত সম্ভব প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার শেষ করে ক্ষমতা জনগনের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল আউয়াল মিন্টু। এছাড়াও ব্যবসায়িক নেতারা দাবি করেন পোশাক শিল্পের ক্ষতি করার পিছনে দায়ী এনবিআরের বিভিন্ন শর্ত। এসময়, এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি করেন অনেকে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, 'আমাদেরকে আরও সংগঠিত হয়ে দলীয় স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে কাজ করতে হবে।'
বিকেএমইএয়ের এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি অনেকে করেছেন। আমাদের ব্যবসা পঙ্গু করার জন্য একমাত্র দায়ী এই এনবিআরের চেয়ারম্যান।'
এদিকে, তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেদের সংগঠন বিজিএমই'র সাধারণ সদস্যদের অভিযোগ, ২০২৪ সালের বিজিএমইএ নির্বাচনে বর্তমান সভপাতি এস এম মান্নান কচি, সংসদ সদস্য সালাম মূর্শেদী, আওয়ামী লীগের বাণিজ্য ও শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজ বাহিনী তৈরি করে হস্তক্ষেপ করেন। তাই অবিলম্বে বিজিএমইএ প্রেসিডেন্টসহ বোর্ড সদস্যদের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।