জামালপুর সদর উপজেলার চর মোহাডাঙ্গা গ্রামের জীবন নাহার গেল বছর লাম্পি স্কিন রোগের কারণে হারিয়েছেন তার আয়ের একমাত্র উৎস। এ বছর আবারও সেই একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে জীবন নাহারের অন্য একটি গরু। এখন গরুর জীবন-মৃত্যুর চিন্তায় দিশেহারা অবস্থা তার।
জীবন নাহার বলেন, 'এর আগে একটা গরু মারা গেছে। আর একটা অসুস্থ হয়ে গেছে। এখন আমি গরুর চিকিৎসাও করতে পারছি না। আমার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে।'
জীবন নাহারের মতো একই অবস্থা দরিদ্র ইজিবাইক চালক শাকিল মিয়া ও জবেদা বেগমের। গরু লালনপালন করে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা খোঁজা প্রান্তিক এই মানুষগুলো অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন। জামালপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়তই আক্রান্ত হচ্ছে নতুন নতুন গরু। ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণে গরু নিয়ে বিপাকে তারা।
একজন গরুর খামারি বলেন, 'আমার খামারের কয়েকটি গরুতে এই রোগ দেখা গেছে। প্রায় এক মাস হলে এই রোগ হয়েছে। ডাক্তার দেখাচ্ছি। তারপরও কমছে না।'
লাম্পি রোগে প্রথমে গরুর ১০৬ থেকে ১০৭ ডিগ্রি মাত্রায় জ্বর দেখা দেয়। সেই সাথে চামড়ায় এক ধরনের গুটি ওঠে। এর দু'এক দিনের মধ্যেই সেই গুটি ফেটে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
জামালপুর সদরের পল্লি পশু চিকিৎসক মো. রেজাউল করিম বলেন, 'অনেক গরু দেখেছি, কিন্তু দেখা গেছে বেশিরভাগ গরুই মারা গেছে।'
লাম্পি ভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার।
জামালপুরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো, ছানোয়ার হোসেন বলেন, 'বাছুর এবং কিছু দুর্বল গরুতে লাম্পি রোগ দেখা যাচ্ছে। খামারিদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।'
গেল এক মাসে জামালপুরের সাত উপজেলায় লাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বেশ কয়েকটি গরু। তবে তার সঠিক তথ্য জানা নেই জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের।