মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় যেন প্রাণ ফিরেছে প্রতিটি বন্দরে। কাজে গতি ফিরেছে ব্যাংক ও কাস্টম হাউসে। ব্রডব্যান্ড সেবা চালুর পর রোববার থেকে চালু হয় মোবাইল ইন্টারনেট। হিলি স্থলবন্দরে কার্যক্রম শুরু হয়ে যায় পুরোদমে।
গেল কয়েকদিনে ১০-১৫ ট্রাক পণ্য আমদানি হয় এই বন্দর দিয়ে। তবে ইন্টারনেট চালু হওয়ায় প্রতিদিন আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০-৯০ ট্রাকে। ব্যবসায়ীরা সহজেই বিল অব এন্ট্রি সাবমিট দাখিল ও এলসি খোলা থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে শুরু করেছেন। এতে ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে। সোমবার ভারতে রপ্তানি হয়েছে রাইসব্যান অয়েল। আর আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ।
বাংলাহিলির সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক জামিল হোসেন চলন্ত জানান, ফোরজি চালু হওয়ার জন্য ব্যাংকে আমরা এলসি করতে পারবো। এর ফলে আমাদের পোর্টের অভ্যন্তরে সকল আমদানিকৃত পণ্য প্রবেশ করবে। এতে আমদানিকারক এবং পোর্টে কর্মরত কর্মকর্তারা ও শ্রমিকদেরও সুবিধা হবে।
হিলি স্থলবন্দর এর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ এর সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান, ইমেইলের মাধ্যমে রপ্তানিকারকদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। যা এতদিন বিঘ্নিত হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় এখন আর কোনো সমস্যা হচ্ছে না
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ গেল সপ্তাহে কিছুটা কমলেও চলতি সপ্তাহ থেকে বাড়তে শুরু করেছে। অটোমেশন ও ম্যানুয়াল দুই পদ্ধতিতে কার্যক্রম চালু রেখেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ বন্দর দিয়ে সব থেকে বেশি আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, টমেটো, আদা ও ক্যাপ্সিকাম। আর তিন দিন বন্ধ থাকার পর রপ্তানি হচ্ছে পাট জাতীয় পণ্য, ঝুট কাপড়, শিশু খাদ্য ও রাইস ব্যান অয়েল। গত সপ্তাহে ১শ ট্রাক পণ্য আমদানি হলেও বর্তমানে সে পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ থেকে ৩শ ট্রাকে। আর একশ থেকে দেড়শ ট্রাক পণ্যে রপ্তানি হচ্ছে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে।
২০ জুলাই থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রমে ধীরগতি নেমে আসে। পরে ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় বাড়তে থাকে রপ্তানি কার্যক্রম। সোমবার সকালে এই বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয় ৯ ট্রাক মাছ ও ১৬ ট্রাক সিমেন্ট, প্লাস্টিসসহ অন্যান্য পণ্য। তবে, ইন্টানেটের ধীরগতির কারণে বিল অফ এন্ট্রি করতে বাড়তি সময় লাগছে। গত কয়েকদিনে প্রতিদিন অন্তত ১ কোটি টাকার ক্ষতির কথা বলছেন তারা।
এদিকে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ জুলাই - ২৮ জুলাই পর্যন্ত কমে যায় আমদানি রপ্তানির পরিমান। এই সময়ে ভারত থেকে পণ্যে আমদানি হয় ১ হাজার ৪১২ ট্রাক। আর রপ্তানি হয় ৪৫৮ ট্রাক। তবে ইন্টারনেট সংযোগ সচল হওয়ায় গতি ফিরেছে বাণিজ্যে। এতে অনলাইনের মাধ্যেমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ে বন্দর কেন্দ্রিক সব কার্যক্রম স্বভাবিক হওয়ার আশা কর্তৃপক্ষের। কাস্টমস কমিশনার জানান, গত ৫ দিনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার।
এদিকে, গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আমদানি বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিবির বাজার স্থলবন্দরে। তবে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে রপ্তানি কার্যক্রম। স্থবিরতা কাটিয়ে এই বন্দরে রপ্তানি পণ্য যাচ্ছে ভারতে।