ওশেনিয়া , উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

অস্ট্রেলিয়ায় ৩০ কোটি ডলার ব্যয়ে সামরিক ঘাঁটি করছে যুক্তরাষ্ট্র

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ চীন সাগর আর চীনের সঙ্গে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘাঁটি তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে খরচ পড়ছে ৩০ কোটি ডলার। দক্ষিণ চীন সাগরে বাণিজ্যিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদারে মূলত এই উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার ডারউইন আর টিন্ডালে রাফ ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর অন্যতম বিনিয়োগের স্থান হয়ে উঠেছে। ২০২৪ আর ২০২৫ সালে মার্কিন কংগ্রেস থেকে এই দুই ঘাঁটিতে বিনিয়োগের লক্ষ্য ৩০ কোটি ডলার। চীনের সঙ্গে উত্তেজনা আর দক্ষিণ চীন সাগরে অস্থিরতা বাড়ার পর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল মার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। ফিলিপিন্সের কাছাকাছি অবস্থিত ডারউইন শহরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমা হামলা হয়েছিল। এই শহর যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া, দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

রয়াল অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোর্স বেজের টিন্ডাল উইং কমান্ডার ফিওনা পিয়ার্সে বলেন, 'টিন্ডালে আমাদের ছোট রানওয়ে, যেন বিমানগুলো দ্রুত অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারে । আমরা বড় পরিসরে কাজ করছি, যেন এই ঘাঁটিতে পৃথিবীর যেকোনো বিমান উড্ডয়ন অবতরণ করতে পারে। সব যুদ্ধবিমানের জন্যই কাজ করছি। অবকাঠামোতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করছে। ভূরাজনৈতিকভাবে টিন্ডাল গুরুত্বপূর্ণ।'

টিন্ডালের ঘাঁটি ডারউইন থেকে ৩২২ কিলোমিটার দূরে, খুলে দেয়া হয় ১৯৮৮ সালে। লোকালয় থেকে দূরে হওয়ায় এই ঘাঁটিতে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও ড্রোন। এই ঘাঁটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগে আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখানে রাখা যাবে বিশ্বের যেকোনো বিমান। এই ঘাঁটিতে নতুন টার্মিনাল ও কন্ট্রোল টাওয়ার স্থাপনে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়া। তবে দূরত্বের কারণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।

মার্কিন মেরিন রোটেশনাল ফোর্সের কমান্ডিং অফিসার কলোনেল ব্রায়ান মালভিল বলেন, 'ডারউইন এমন একটি স্থান, যেখান থেকে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আসবে। দেশের সরকার, সামরিক বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এই ঘাঁটি উন্নয়নে অনেক সহযোগিতা করছে। ঘাঁটির সক্ষমতা বাড়ানোই লক্ষ্য।'

রাফ ঘাঁটিতে নতুন অবকাঠামো তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বড় ঘাঁটি তৈরির উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেন চীন থেকে আসা যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। এদিকে, ডারউইনে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় স্থানীয়দের শহরে চলে আসতে হচ্ছে। অনেকেই হারাচ্ছেন ভিটেমাটি।

স্থানীয় একজন বলেন, 'উত্তরাঞ্চলে কাজ করছি। এই এলাকার আশেপাশে যেসব মানুষ থাকে, তাদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা জমির জন্য এতো কাচ করেছি, তারা এই জমিতে কাজ করেছে। এই ভূমির মালিক আমরা। তাদের বলবো দক্ষিণে যান।'

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো উত্তরাঞ্চলের সামরিক নিরাপত্তা জোরদারে আগ্রহী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিনিয়োগ করবে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। দক্ষিণ চীন সাগরে দেশটির মোট বাণিজ্যের দুই তৃতীয়াংশ নির্ভর করে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে আকুস চুক্তির আওতায় ক্যানবেরাকে পরমাণু সাবমেরিন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার জনবসতি থেকে দূরে মার্কিন ঘাঁটি তৈরির বিষয়টি এখনও প্রায় অজানা।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর