দেশে এখন
0

মধুমতী নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে জমি-ঘরবাড়ি

প্রতি বছরের মতো এবারও, বর্ষা মৌসুমে মধুমতী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে গেছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থাপনা। আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না এ অঞ্চলের নদী পাড়ের বাসিন্দাদের। নিজ গ্রাম ছেড়ে তারা চলে যাচ্ছেন আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে।

প্রতি বছর জুন-জুলাই মাসে মধুমতী নদী পাড়ের বাসিন্দারা তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়েন। এবছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। জুনের শেষ সপ্তাহে শুরু হয়েছে ভাঙন। প্রতিদিনই নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে তীরবর্তী বিভিন্ন স্থাপনা।

ছোটবেলা থেকেই মধুমতী নদীকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন পাড়ের বাসিন্দা মো. আবু বক্কর ভূঁইয়া। চোখের সামনে দেখছেন, প্রতি বছরই নদী একটু একটু করে গিলে খেয়েছে তার বসত ভিটা।

নদীর পাড়ে বসে নিজের হারানো বসতবাড়ির জায়গা দেখছেন

সত্তর বছরের জীবনে এই বৃদ্ধ ছয়বার ছয়টি বাড়ি নির্মাণ করলেও একটি বাড়িতেও বসত করতে পারেননি স্থায়ীভাবে। গত বছর শেষ বাড়িটি যখন বিলীন হয় তখনই হার মানেন মধুমতীর কাছে। নিরুপায় আবু বক্কর শেষমেষ নদী থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ঘর করেন। তবে, নদী পাড়ের মায়া এখনও পিছু ডাকে। অবসরে তার অপলক চাহনি আটকে থাকে মধুমতীতে।

আবু বক্কর বলেন, 'আমার দাদার দু'টি ভিটা, আমার চারটা, সব ভাঙতে ভাঙতে অসহ্য হওয়ার পর আমি এখান থেকে চলে গেছি। এখন মাঝে মাঝে এসে দেখে যাই।'

নদী ভাঙনের এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর, ইতনা, শালনগর, লাহুড়িয়া ইউনিয়নের হাজারও বাসিন্দার। গেল তিন সপ্তাহ ধরে একটু একটু করে ভাঙ্গছে মধুমতী নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা। প্রতিদিনই নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে প্রান্তিক কৃষকদের ফসলি জমি, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা জানান নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

নড়াইল পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শফি উল্লাহ বলেন, 'লোহাগাড়া উপজেলার যে ভাঙন প্রবণ স্থানগুলো ছিল সেগুলোতে এরইমধ্যে নদীভাঙন রোধের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে।'

এর মধ্যে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ধানাইড়, মৌলভী ধানাইড়, চর ধানাইড়, শিয়েরবর, রামকান্তপুর, শালনগর, পার শালনগর গ্রামসহ নদী পাড়ের অন্তত ৬ কিলোমিটার এলাকায়।

এসএস