বগুড়ার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২টি ও সোনাতলা উপজেলার ৫টি এবং ধুনট উপজেলার ২টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার পরিবারের এক লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গবাদি পশু ও বাড়ির আসবাবপত্র নিয়ে দুর্গত মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। সরকারি সাহায্য সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ করছেন তারা। পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে আশ্রয় নেয়া স্থানে।
গতকাল বিকেল থেকেই জেলা প্রশাসন দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছেন। চাল, নগদ টাকা এবং শুকনো খাবার বরাদ্দের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
দেশের উত্তরের জেলা গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় যে ১৬৫টি চর আছে, সেগুলোর মানুষ কয়েকদিন ধরেই পানিবন্দি হয়ে আছেন। চর ছাড়াও যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের বন্যার পানি সমতল এলাকায় পৌঁছাতে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে চলছে। এতে করে বসতবাড়িসহ কৃষকের পাট, ভুট্টা, মরিচ, বাদাম ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে।
ঢলের পানিতে তলিয়েছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, বাড়ছে জনদুর্ভোগ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্গত এলাকার মানুষ। উঁচু আশ্রয়ের সন্ধানে অনেকে ছেড়েছেন বসতভিটা। গবাদিপশু ও গৃহস্থালি জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ছে দুর্ভোগের মাত্রা।
এদিকে গতকাল বিকেল থেকে হবিগঞ্জের স্লুইজ গেইট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকছে প্রবল বেগে। নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে না নামা পর্যন্ত স্লুইজ গেইট মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে পানিতে আশেপাশের গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। আজমিরিগঞ্জের বাসিন্দারা গত চারদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। বেশকিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রতিবছর বন্যা এলেই সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন নিম্নাঞ্চল ও চরের লাখো মানুষ। নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে দুর্ভোগ। অনিশ্চয়তায় পড়ে খাবার ও বিশুদ্ধ পানিসহ ঘর-গৃহস্থালির তাবৎ জিনিসপত্র। এ অবস্থায় দুর্গত মানুষের প্রয়োজন ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা।
তবে বছর বছর ধরে চলা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পরিত্রাণ চান বানভাসিরা। এ কারণে নদী খননসহ বাঁধ রক্ষার মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান চান তারা।