ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের বংশ বিস্তার ও প্রজনন নিশ্চিতে সরকার সমুদ্রে সকল প্রজাতির মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেল-জরিমানা এবং অর্থদণ্ডের তোয়াক্কা না করে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সমুদ্রে চলছে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার।
মৎস্য বন্দরের শিববাড়িয়া নদের দুই তীরে শতশত ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে মাছ শিকারের মহাআয়োজনের। আহরিত মাছ রাতের বেলায় বন্দরে উৎসবের আমেজেই হচ্ছে বেচা বিক্রি। আবার তা যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ যোগে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে।
একজন জেলে বলেন, 'এখন তো মাছ ধরা নিষেধ, কিন্তু আমাদের তো বাঁচতে হবে। আমরা মাছ ধরি, আমাদের বেতন দেয়। মাছ ধরা বন্ধ থাকলে আমরা তো সরকার থেকে কোনো ভাতা পাই না। তাহলে আমরা চলবো কীভাবে।'
মৎস্য বন্দরে ব্যস্ত থাকা কেউ কেউ অকপটে শিকার করলেন নিষিদ্ধ সময়ে মাছ বেচা-বিক্রির কথা।
একজন ট্রলার মালিক বলেন, 'এখন তো দেখা যায় যে সব বোট চলছে। সেজন্য আমিও বের করেছি।'
পটুয়াখালী জেলায় ৮৪ হাজার ৫৩৭ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ৪৭ হাজারের বেশি জেলে পরিবার নিষেধাজ্ঞার সময় ৮৬ কেজি করে খাদ্য সহায়তা পায়। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, লোকবল ও সরঞ্জাম সংকট থাকলেও নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তৎপর তারা।
পটুয়াখালী কলাপাড়া মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, 'এই বিশাল সমুদ্রসীমা পাহারা দেয়ার জন্য যে জনবল দরকার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতি আছে। এজন্য ২৪ ঘণ্টা খুব কঠোরভাবে এই ব্যবস্থা করতে পারছি না। তবুও আমরা অভিযান চালাচ্ছি।'
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময় অবাধে এমন মাছ শিকারের ফলে একসময় সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হওয়া এবং মাছের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে।