প্রথমবার ট্রেনে চড়ার সুযোগ পেয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উল্লাসে মাতেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের যাত্রীরা। আশা ছিল প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প এ জনপদের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন আনবে। হয়েছেও কিছুটা, রেল চালুর পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বাস ভাড়াও কমে যায় ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত।
তবে উল্লাসে ভাটা পড়ে যখন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চালু না করে কেবল ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চালু করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের দাবির মুখে চলতি বছর ঈদুল ফিতরের সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অল্প সময়ের মধ্যে ট্রেনটি হয়ে ওঠে জনপ্রিয়।
লাভজনক ও যাত্রী চাহিদা থাকার পরও টানা ৫২ দিন চলার পর ইঞ্জিন ও জনবল সংকটের কারণ দেখিয়ে ট্রেনটি বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। এতে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় তীব্র ক্ষোভ ।
একজন যাত্রী বলেন, 'চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার আসা-যাওয়ার জন্য আমাদের জন্য ট্রেনটা বেশি জরুরি। কারণ খুব অল্প সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায়। আমাদের দাবি এই ট্রেন যেন বন্ধ না করা হয়।'
ঈদুল-আজহায় আবারও বিশেষ ট্রেন চালু করে কর্তৃপক্ষ। সেটিও নির্ধারিত মেয়াদ শেষে বন্ধ করে দেয়ার কথা ওঠায় ফের আন্দোলনে নামে দুই জেলার বাসিন্দারা। সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেয়া হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে কক্সবাজারগামী সব ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হবে। এই স্পেশাল ট্রেন স্থায়ী করারও দাবি ওঠে।
একজন আন্দোলনকারী বলেন, 'আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক যে ট্রেনের জন্য আমাদের নামতে হয়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন তো আমাদের প্রাণের দাবি। আগামী ২৫ জুন থেকে ট্রেন বন্ধ রাখার বিষয়টি যেন স্থগিত করে ট্রেন চালু রাখা হয় , এটা আমাদের সবার দাবি।'
এ অবস্থায় রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় আগামী ২৪ জুলাই পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেনটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। বাড়ানো হয় বগি ও সিট সংখ্যা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, 'এই রুটে আমাদের যাত্রীদের অনেক চাপ থাকে। সেজন্য রেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখানে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করে ট্রেনটা বড় করে অধিক যাত্রী পরিবহণ করা হবে।'
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিশেষ ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে কক্সবাজার পৌঁছানোর পূর্বে ৮টি স্টেশনে থামে। শোভন শ্রেণীর আসনের জন্য সর্বনিম্ন ৪৫ টাকা এবং প্রথম শ্রেণীর আসনের জন্য ১৮৫ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। তবে কক্সবাজার পর্যন্ত এই ভাড়া ৩৪০ টাকা।