বিদেশে এখন

চন্দ্রবাবু-নীতিশ কুমারের হাতে বিজেপির ভাগ্য!

চন্দ্রবাবু-নীতিশ কুমারের হাতে বিজেপির ভাগ্য। ১০ বছর ধরে লোকসভার আধিপত্য ধরে রাখার পর এবারের নির্বাচনে জয়ের পরও বেকায়দায় গেরুয়া শিবির। জোটের অন্যান্য সদস্য বিশেষ করে তেলেগু দেশাম পার্টি ও জনতা পার্টির সমর্থন ছাড়া সরকার গঠন করা কঠিন ক্ষমতাসীনদের জন্য। রাজনীতিতে দলবদল যাদের বাঁ-হাতের খেলা, সেই চন্দ্রবাবু নাইড়ু আর নীতিশ কুমারের ওপর নির্ভর করছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের সরকার গঠনের হিসাব-নিকাশ।

২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে ভারতের রাজনীতিতে অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসেবে উত্থান ঘটে ডানপন্থি রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স- এনডিএ’র। সেবার সরকার গঠনে জোটের শক্তির ওপরই ভর করতে হয়েছিল বিজেপিকে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এককভাবে সরকার গঠনে ন্যূনতম আসনের চেয়ে বিজেপি দলগতভাবে ৩১টি আসন বেশি পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও ২৪-এর নির্বাচনে ফের সরকার গঠনে জোটের সাহায্য নিতে হচ্ছে মোদিকে।

রাজনৈতিক সমীকরণ চিরস্থায়ী নয় বলেই হয়তো গেল বছর কংগ্রেসের নেতৃত্বে দেশের ১৮টি বিরোধী দল নিয়ে ইন্ডিয়া জোট গঠনের পরই ফাটল ধরে এনডিএ জোটে। তিন দশকের মিত্রতা ভুলে এনডিএ ছেড়ে ইন্ডিয়া জোটে যোগ দেয় পাঞ্জাবের শিরোমণি আকালি দল ও মহারাষ্ট্রের শিবসেনা।

গেল বছর জুলাই মাসে ২৮টি দল নিয়ে মাঠে নামে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। জোটে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দেয় তেলেঙ্গানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশাম পার্টি, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং টিপরা মোথা।

এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে অমিত শাহ ও মোদির মতো হেভিওয়েট বিজেপি প্রার্থীরা ৪০০ আসন পার করার ঘোষণা দিলেও ২৪০ আসন পার করতে পারেনি ক্ষমতাসীনরা। তাই বল এখন তেলেগু দেশাম পার্টি আর জনতা পার্টির কোর্টে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ফের জোটের সমর্থন ছাড়া বিজেপির সরকার গঠনের উপায় নেই বলে এই সময় আলোচনার কেন্দ্রে চন্দ্রবাবু নাইডু আর নীতিশ কুমার।

দ্য প্রিন্টের বার্তা সম্পাদক শেখর গুপ্তা বলেন, 'বিকেলে খবরের প্রধান শিরোনাম নরেন্দ্র মোদি চন্দ্রবাবু নাইডুর সাথে যোগাযোগ করেছেন। শেষ কবে শুনেছিলেন, নরেন্দ্র মোদি ভোটের ফলাফল বের হওয়ার সাথে সাথে জোটের একজন নেতাকে ফোন করেছেন? গত দশ বছরে এনডিএ জোটের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। একের পর এক দল জোট ছেড়ে দিয়েছে।'

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে ক্ষমতা, ব্যক্তিগত স্বার্থ কিংবা অর্থনৈতিক সুবিধা আদায় করতে হরহামেশাই দল বদল করেন এই দুই নেতা। তবে মোদি তথা বিজেপির এই দুঃসময়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫টি আসনের মধ্যে ১৬টি জিতেছে নাইডুর তেলেগু দেশাম। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা ইন্ডিয়া জোটের সাথে কোনোভাবেই হাত মেলাবেন না। বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে এনডিএর প্রতি সমর্থন অক্ষুণ্ন রাখবে তেলেগু দেশাম পার্টি।

ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, এনডিএ জোটের নেতাদের সাথে একই ফ্লাইটে দিল্লি যাচ্ছেন জনতা দলের নীতিশ কুমার। বিজেপিসহ শরিক দলের নেতাদের সাথে বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি। বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে জনতা দল ও বিজেপি উভয় দলই ১২টি করে আসন পেয়েছে। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে হলে বিজেপিকে জোটের তৃতীয় বৃহত্তম জনতা দলের সমর্থন ধরে রাখতেই হবে। ফলে আরও একবার কিং মেকারের খেতাবটি নীতিশ কুমারের নামের পাশে যোগ হবে- এমনটাই মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর