আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি

ভারতের সঙ্গে চুক্তিসহ আমদানি-রপ্তানিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বন্ধুরাষ্ট্র ভারত। তবে বিভিন্ন চুক্তিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ। বিশেষ করে তিস্তা চুক্তি, ট্রানজিট ও আমদানি-রপ্তানিতে এখনো সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ ও ভারতীয় পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের মতে নতুন সরকারের আমলে বাংলাদেশকে আরও কৌশলী ভূমিকা পালন করতে হবে চুক্তি সম্পাদনায়।

ভারত, বিশ্বের অন্যতম বড় দেশ। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির দেশও ভারত। আর এই কারণেই তার প্রতিবেশি নীতি নিয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোর আগ্রহ বরাবরই বেশি। তাৎপর্যবহ এ কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রয়েছে এক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন। ভারতের প্রতিবেশি নীতি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রতিবেশি নীতি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। ২০১৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবার নেপাল সফরে ঘোষণা করেন, ভারতের 'প্রতিবেশি প্রথম' নীতির শীর্ষে রয়েছে নেপাল। আবার ঠিক ৫ বছর পর ভারতীয় হাইকমিশনার বলছেন, ভারতের কাছে বাংলাদেশই প্রথম।

এরকম সম্পর্কের মধ্যেই দুই দেশের মধ্যে রয়েছে বেশকিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। তার মধ্যে অন্যতম আমদানি-রপ্তানি চুক্তি। বাংলাদেশের ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে ভারত তার দেশে পণ্য পরিবহন করছে। নেপাল-ভুটানে সরাসরি পণ্য পাঠাতে ভারতের সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমদানি-রপ্তানি, ট্রানজিট সুবিধা পেতে পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশকে আরও কৌশলী হতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন,  'এই দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে দর কষাকষির জায়গাতে আমরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অমীমাংসিত হিসেবে দেখবো। এইগুলোতে আরও কিভাবে প্রগ্রেস করা যায় সেগুলো দেখবো। ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। এখন যদি আমি ট্রানজিট সুবিধা দেয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ভারত ইকোনোমিতে লাভবান হবে। আমরা আমাদের মতো লাভবান হবো। এখন দাঁড়িপাল্লা দিয়ে যদি সব কিছু করতে যায় তাহলে হবে এইটা পররাষ্ট্রনীতিতেও নেই।

এদিকে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত তিনটি সরকারের আমলে ভারতের সাথে সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্ক তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, আন্তঃসংযোগ, অভিন্ন নদীগুলোর পানিবন্টন, সীমান্ত বিরোধ নিরসন ইত্যাদি বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পারিক দ্বি-পাক্ষিক অমিমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, 'আমাদের অনেক কাজ করার সুযোগ আছে যেমন ভারত আমাদের ৮ বিলিয়ন ডলারের লাইন অব কেডিট দিয়েছে। কিন্তু সেটার ২ বিলিয়ন ডলারও ব্যবহার হয়নি। কারণ হচ্ছে আমাদের দুই দিকে সক্ষমতার ঘাটতি আছে।'

এদিকে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সাথে ভারতীয় সরকারের সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা দুই দেশের এজেন্ডায় খুব বড় একটা অংশ জুড়ে থাকবে বলেও মনে করছেন তারা।

ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু'র সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্য বলেন, 'বাংলাদেশে বড় অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। ভারতের পরে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় পাওয়ার হিসেবে গড়ে উঠেছে। দুই দেশের মাধ্যমে যদি পজিটিভ থাকে তাহলে মনে হয় না এই ধরনের চুক্তি আগামীতে সমস্যা হবে।'

এছাড়াও সময়মতই গঙ্গা চুক্তি পুনরায় নবায়ন করা হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর