মধ্যপ্রাচ্য
বিদেশে এখন

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে স্লোভেনিয়া

বিশ্বের ১৪৭তম দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার দ্বারপ্রান্তে স্লোভেনিয়া। সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন পাওয়ায় এখন অপেক্ষা শুধু পার্লামেন্টের অনুমোদনের। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতকে (আইসিসি) এখনও নিষেধাজ্ঞা না দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, যুদ্ধ বন্ধ করলে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে চুক্তি করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে হামাস।

আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ের পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দ্বারপ্রান্তে আছে স্লোভেনিয়া। এতে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়া দেশের সংখ্যা পৌঁছাবে ১৪৭ এ। জুনে এ তালিকায় যুক্ত হতে পারে ইউরোপের আরও তিন দেশ বেলজিয়াম, মাল্টা ও পর্তুগাল।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট গোলব জানান, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে তার দেশ। এরমধ্যেই প্রস্তাবটিতে সমর্থন দিয়েছে স্লোভেনিয়ার সরকার। এখন অপেক্ষা শুধু পার্লামেন্টের অনুমোদনের।

রবার্ট গোলব বলেন, 'ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে নয়। সিদ্ধান্তটি শান্তির পক্ষে। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমেই ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।'

বর্বরতার সব মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের গাজায় অভিযান। শুধু বৃহস্পতিবারই রাফায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫৩ ফিলিস্তিনি। বাদ যায়নি উপত্যকাটিতে কর্মরত রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মীরাও। নিষ্ঠুরতার পরেও অশ্রুভেজা চোখে মানবিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প সহকর্মীদের।

রাফায় কর্মরত একজন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী বলেন, 'ওরা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সৃষ্টিকর্তা সবার প্রতি সহায় হোক। সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথে আমরা কাজ চালিয়ে যাবো।'

রাফায় স্থল অভিযান বন্ধে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের নির্দেশনাকে তোয়াক্কা করছে না ইসরাইল। উল্টো দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, আইসিসিকে এখনও নিষেধাজ্ঞা না দেয়ায় মার্কিন প্রশাসনের ওপর হতাশ তিনি।

নেতানিয়াহু বলেন, 'তারা স্লোগান দেয় আমেরিকা ধ্বংস হোক, ইসরাইল ধ্বংস হোক। এগুলো সমর্থন করে রায় দিচ্ছে আইসিসি। নিজ দেশের নিরাপত্তার খাতিরে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আইসিসিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া।'

ইসরাইলের দাবি, রাফাহ অভিযানে নিহত হয়েছে অন্তত ৩০০ হামাস যোদ্ধা। যদিও দক্ষিণের শহরটিতে চলমান ইসরাইলের আগ্রাসনকে বড় সামরিক অভিযান নয় বলে মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধে আলজেরিয়ার উত্থাপিত প্রস্তাবকে ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, গাজা ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রস্তাব ছিল এটি।

যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, 'প্রস্তাবটি ভারসাম্যহীন। কারণ সংঘাতের জন্য হামাসকে দায়ী করা হয়নি। রাফায় চলমান যুদ্ধ আগামীকালই শেষ হতে পারে যদি হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়ে জিম্মিদের মুক্তি দেয়।'

এদিকে হামাস জানিয়েছে স্থল অভিযান বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না সংগঠনটি। তবে যুদ্ধ বন্ধ করলে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে চুক্তি করতে প্রস্তুত হামাস।

যুদ্ধ শুরুর প্রায় ৮ মাস পর ইসরাইল থেকে গাজায় খাদ্যপণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে তেল আবিব। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, উপত্যকায় মানবিক সহায়তা বাড়াতে নেয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর