উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন

ঝড়ের তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রে ২১ জনের প্রাণহানি

ভয়াবহ টর্নেডো ও ঝড়ের তাণ্ডবে যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি অঙ্গরাজ্যে ৪ শিশুসহ অন্তত ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। ওকলাহোমা, টেক্সাস এবং আরকানসাসসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে প্রায় ৫ লাখ বাসিন্দা। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।

১ জুন একটি সম্ভাব্য হারিকেনের তাণ্ডব মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছিলো যুক্তরাষ্ট্র। এর মাঝেই রোববার (২৬ মে) ওকলাহোমা সীমান্তের কাছে একটি শক্তিশালী টর্নেডো আঘাত হানে। যার ধাক্কা লাগে টেক্সাস, আরকানসাস ও কেনটাকিতেও। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এসব এলাকার বহু বাড়ি-ঘর। এতে হতাহতের শিকার হয়েছেন বহু বাসিন্দা। আবহাওয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে এমন পূর্বাভাস থাকায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল এলাকার অন্তত ১১০ মিলিয়ন বাসিন্দাকে জরুরি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

টেক্সাস, কেন্টাকির পর আগামী কয়েক দিনে ফিলাডেলফিয়া, বাল্টিমোর ও ওয়াশিংটন ডিসিতে একাধিক টর্নেডো আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া পর্যটনের জন্য জনপ্রিয় নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও আটলান্টার মতো অঙ্গরাজ্যে ফ্লাইট বিলম্বের আশঙ্কা থাকায় যাত্রীদের আগাম সতর্ক করেছে বিমান পরিষেবা প্রতিষ্ঠানগুলো।

ভয়াবহ ঝড়ের আঘাতে ভেঙে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় নেমে আসে স্থবিরতা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ৫ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। রাজ্যগুলোতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় দেড় লাখ বাসিন্দা। নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অনেককে।

স্থানীয় একজন বলেণ, 'আমার পরিবার বিপদে রয়েছে, এমন সংবাদ পেয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখানে ছুটে এসেছি। তবে আমি পৌঁছানোর আগেই তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।'

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব এলাকার লণ্ডভণ্ড বাড়িঘর ও রাস্তায় পড়ে থাক গাছপালা সরানোর কাজে যুক্ত হয়েছেন জরুরি বিভাগের সদস্যরা। এছাড়া ঝড়ের আঘাতে পরিণত ধংসস্তুপের নগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতেও কাজ করছেন জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ সেবায় নিয়োজিত আছে কর্মীরা।

যুক্তরাষ্ট্র টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, 'টেক্সাসসে এই মুহূর্তে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা ২৪ ঘন্টা কাজ করছেন।'

ঝড়ের গতি আর না থাকলেও এখনও দুর্যোগকালীন সতর্কার আওতায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক কাউন্টি। তীব্র বাতাস এবং শিলাবৃষ্টির আভাস থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোয় জরুরি অবস্থা জারি রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে চলতি মাসের ৭ তারিখেও টর্নেডোর আঘাতে বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছিল ওকলাহোমা রাজ্য।

এদিকে আর্মেনিয়া এবং জর্জিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে নদীর তীর ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢোকার কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে প্রাণও গেছে মানুষের। পানিতে ডুবে রাস্তাঘাটগুলো নদীতে পরিণত হওয়ায় এক গ্রামের সঙ্গে আরেক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় একজন বলেন, 'আমাদের বাড়িঘর বেশির ভাগই প্লাবিত হয়েছে। সেখানে পানি যাওয়ার জায়গা নেই। আমাদের একটি রাবারের নৌকা ছিল, কিন্তু তা পাংচার হয়ে গেছে।'

ইতোমধ্যে উত্তরের বিপজ্জনক এলাকা থেকে শত শত বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আর্মেনিয়া কর্তৃপক্ষ। পানিবন্দিদের উদ্ধারে নেমেছে জর্জিয়ার উদ্ধারকর্মীরাও।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর