বিদেশে এখন

আইসিসির যুদ্ধাপরাধ তালিকায় শীর্ষ নেতার নাম

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তালিকায় আছে বিশ্বের অনেক শীর্ষ নেতার নাম। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। নেতানিয়াহু, পুতিনসহ বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা এখন আদালতের মোস্ট ওয়ানটেড তালিকায়। যদিও ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়াসহ বেশক'টি দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করে না।

গণহত্যা, মানবতারবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ, আগ্রাসন বা আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি। এসব অভিযোগে বিশ্বের যে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে এই আদালত। যদিও ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করে না।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালন্টকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযুক্ত হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ দুই নেতাও। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কৌঁসুলি করিম খান।

তিনি বলেন, 'গাজায় যুদ্ধাপরাধ প্রমাণিত, যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়েছে। বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ এবং ইচ্ছা করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তারা।'

দুই দশকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। ২০২৩ সালে মার্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সামরিক অভিযানের নামে ইউক্রেনের শতশত শিশুকে অপহরণ ও নির্বাসনে পাঠানোর অভিযোগ উঠে। পুতিনসহ দেশটির শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনারকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। তবে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ রাশিয়া আইসিসির এখতিয়ার স্বীকার করে না।

সুদানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় ২০০৯ সালে। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং তিনটি গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়। তবে আন্তর্জাতিক আদালত তাকে কোনো সাজা দিতে পারেনি।

উগান্ডার লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মির প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ কোনির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, শিশু ও নারী নির্যাতনসহ ৩৬টি অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। ২০০৫ সালে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। তিনি দীর্ঘ দিন পলাতক।

লিবিয়ার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফির পর তার ছেলে সাইফ আল-ইসলাম গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। গাদ্দাফির মৃত্যুর পর সাইফ জিনতান নামক যোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়েন। ২০১৭ সালে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনায় মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত বন্দী ছিলেন।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির উদ্দেশ্য, বিচারের সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং তদন্ত বা আদালতের কার্যক্রমকে যেনো বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সে ব্যবস্থা করা। আন্তর্জাতিক আদালত এখন পর্যন্ত ৩২ জনের বিরুদ্ধে বিচারকাজ শেষ করেছে। এদের মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ৯ জনের বিরুদ্ধে।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর