মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে যেন গাজায় হানা দিলো শক্তিশালী ঝড় বায়রন। যুদ্ধবিরতির পরও ইসরাইলি হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই এ ঝড়ের তাণ্ডবে জীবন যুদ্ধে কঠিন বাস্তবতা মুখোমুখি লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি।
তীব্র শীতের মধ্যে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় গাজাবাসীর কষ্টের তীব্রতা বেড়েছে কয়েকগুণ। ঝড় বায়রন লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে অনেক তাঁবু। এরইমধ্যে শিশুসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে শক্তিশালী ঝড় বায়রন। অনেক তাঁবু পানিতে তলিয়ে থাকায় নির্ঘুম রাত পার করতে হচ্ছে বহু মানুষকে।
স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘সারা রাত বাচ্চাসহ পুরো পরিবার নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রাপ্তবয়স্করাই বন্যায় দিশেহারা। সেখানে ছোট বাচ্চাদের কী করার আছে, বাচ্চারা কীভাবে সামাল দেবে?’
ইসরাইলি আগ্রাসনে দুর্বল হয়ে পড়া অনেক বাড়িঘর ঝড়ের সময় ধসে পরায়ও প্রাণ গেছে অনেকের। ধ্বংসস্তূপ থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। ভারী সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।
উদ্ধারকর্মীদের একজন বলেন, ‘আমাদের প্রধান বাধা হল প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম খুঁজে বের করা। অনেক বুলডোজার জ্বালানির অভাবে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এছাড়াও আমাদের ভারী উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।’
আরও পড়ুন:
শনিবারও গাজায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং শিলাবৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে সাড়ে সাতশোর বেশি স্থানে আশ্রয় নেয়া সাড়ে আট লাখ মানুষের জীবনযাত্রা হুমকিতে পড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। দুশ্চিন্তার পাল্লা আরও ভারী হচ্ছে অসহায় গাজাবাসীর।
এদিকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সামর্থ্য নেই বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তীব্র শীতের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতিতে তাঁবুতে থাকা গাজাবাসীর অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। শীতের মধ্যে ঝড়-বৃষ্টিতে রোগের প্রকোপ বাড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে আগামী বছরের শুরুর দিকেই গাজায় জাতিসংঘ অনুমোদিত আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী আইএসএফ মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে পরিকল্পনা করতে ১৬ ডিসেম্বর দোহায় হবে সম্মেলন। বাহিনীতে যোগ দিতে ২০ হাজার সেনা প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে ইসরাইলের ওপর চাপ দেয়ার দাবিতে একটি প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপুল ভোটে সমর্থন পেয়েছে।





