বিদেশে এখন

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ঝাঁকুনি, রোমহর্ষক বর্ণনা যাত্রীদের

মাঝ আকাশে দুর্ঘটনা কবলিত সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের বেশ কয়েকজন যাত্রী নিরাপদে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। বাকিরা থাইল্যান্ডে জরুরি অবতরণের পর সেখানে রয়ে গেছেন। আকাশে বিমানের এমন ঝাঁকুনির রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন যাত্রীরা।

জাফরান আজমি, লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুরগামী বোয়িংয়ের 'বিএএন সেভেন সেভেন সেভেন থ্রি জিরো জিরো ই আর' বিমানের যাত্রী ছিলেন। তিনি বলছিলেন, মঙ্গলবার মাঝ আকাশে বিমানের ভয়াবহ ঝাঁকুনির কথা। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের 'এসকি উথ্রি টু ওয়ান' এই বিমানটির লন্ডন যাওয়ার কথা থাকলেও মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ওপর আসার পর হঠাৎ এয়ার টারব্যুলেন্সের মধ্যে পড়ে। যাত্রীদের তখন সকালের খাবার দিচ্ছিলেন কেবিন ক্রু। হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ৩৭ হাজার ফিট থেতে ৩১ হাজার ফিটে নেমে যায় বিমানটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিমানের ছাদে আঘাত পান অনেকে।

জাফরান আজমি বলেন, ‘মনে হয়, ১০ সেকেন্ড লেগেছে পুরো ঘটনা ঘটতে। আমি আমার চেয়ারে ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম কিছু হচ্ছে। যারা দাঁড়িয়েছিল তারাই বেশি আঘাত পেয়েছে। দেখছিলাম মানুষ উপরে উঠে যাচ্ছে। সিলিংয়ে আঘাত পাচ্ছে।’

এই ঘটনায় হার্ট অ্যাটাকে এক ব্রিটিশ নাগরিকের মৃত্যুর পাশাপাশি অন্তত ৩০ জন আহত হয়। যদিও থাইল্যান্ডের সামিতিভেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ৭১ জনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। বিমানটিতে কেবিন ক্রু ছিলেন ১৮ জন। বিমানের জরুরি অবতরণের পর বুধবার অনেক যাত্রী ও কেবিন ক্রুকে ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। জরুরি অবতরণের পর বোয়িংয়ের বিমানটিকে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে রাখা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত করছে সিঙ্গাপুরের যোগাযোগ কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ এয়ারলাইন্সগুলোর একটি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সকে বলা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভয়াবহ কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি এই এয়ারলাই্ন্সের কোন ফ্লাইটের। তবে এয়ার টারব্যুলেন্সের কারণে বিমানের দুর্ঘটনা নতুন নয়।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অনেক এয়ারলাইন্সে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ ২০০০ সালে সিঙ্গাপুর থেকে লস অ্যাঞ্জেলসগামী একটি বিমান তাইপেতে তাইওয়ান তাওইউয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ ঘটনায় বিমানে থাকা ১৭৯ জন যাত্রীর মধ্যে ৮৩ জনের প্রাণ যায়।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর