ইরানের ৮ম প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালে উত্তর-পূর্ব ইরানের মাশহাদে শহরে। মাত্র ২০ বছর বয়সে কারাজ শহরের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপ-প্রধানের দায়িত্ব পান ইব্রাহিম রাইসি। ২০১৯ সালে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমতে থাকে।
বিচার বিভাগ ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে একটি গভীর সংযোগ প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন রাইসি। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাসান রুহানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যান তিনি। রুহানি বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির আলোচনার এগিয়ে নেন। তখনই ইরানের রাজনৈতিক মধ্যপন্থী হিসেবে সামনে আসেন রাইসি। যিনি রুহানির চেয়ে আরও কট্টরপন্থী ছিলেন।
এরপর ২০২১ সালে ৬২ শতাংশ ভোটে জিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইব্রাহিম রাইসি। নির্বাচনকে বিতর্কিত ঘোষণা করে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর তাকে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ২০২২ সালে হিজাব নিয়ে বিতর্কের জেরে আন্দোলন ইরানসহ পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সবই কঠোর হাতে দমন করেন রাইসি। আন্তর্জাতিক সংকটে কখনও পিছপা হননি রাইসি। এমনকি ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতেও সবচেয়ে আগে এগিয়ে এসেছে ইরান।
বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারে রাইসির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও ছিলেন। কূটনীতিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ান ইরাক-সিরিয়া সংকট সমধানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়ান ও আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি নিহত হয়েছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন, স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।