দিগন্ত বিস্তৃত সবুজের মাঠে হলুদ রঙের সমারোহ। পাখির চোখে দেখলেও যেন শেষ হবে না মাঠের বিস্তৃতি। বরগুনায় গ্রামীণ পথ ধরে এগুতেই চোখে পড়বে অসংখ্য সূর্যমুখী ফুলের বাগান।
দেশের সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয় দক্ষিণের জেলা বরগুনায়। উপকূলের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের উপযোগী- যেকারণে দিন দিন কৃষকরা ঝুঁকছেন এই ফুলের আবাদে। স্বল্প খরচ এবং কম সময়ে ভালো ফলন হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
এক কৃষক বলেন, এর ফলন খুব ভালো হইছে। এই বীজটা খুব ভালো তাই লাভবান হতে পারছি।
পথিক আটকে যায় নয়নাভিরাম এসব মাঠের দৃশ্যে। শহুরে যান্ত্রিক জীবনকে ক্ষণিকের বিরতি দিতে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন সূর্যমুখীর মাঠে।
তারা বলেন, এটা কৃষকের আয়ের জায়গা হলেও পর্যটনের জন্য সূর্যমুখী ফুল ভীষণভাবে সমাদৃত। এতো সুন্দর ফুল দেখে খুব ভালো লাগছে। সবাই মিলে ছবি তুললাম, সুযোগ পেলে আবারও আসতে চাই।
কোলেস্টেরলমুক্ত সূর্যমুখীর তেলে প্রচুর প্রাণশক্তি থাকায় দিন দিন বাড়ছে এই তেলের চাহিদা। উচ্চফলনশীল কাবেরী চ্যাম্প জাতের বীজ থেকে পাওয়া যায় ৪৫-৫০ শতাংশ সূর্যমুখী তেল। জেলার ৪ হাজার কৃষকের মাঝে এসব বীজ বিতরণসহ সূর্যমুখী চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. জাকারিয়া হোসেন বলেন, 'সূর্যমুখীতে তিনবার সেচ দিলে ফলন ভালো পাওয়া সম্ভব। আমরা তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। নিয়মিত পরিচর্যা করলে অবশ্যই তারা সফল হবে।'
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন ও কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন বৃদ্ধি ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যেও নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
এবছর বরগুনায় ৩ হাজার ৯৫৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। যদিও সূর্যমুখী তেলের চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। তবে, সরকার ও তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্যোগ নিলে দেশের সূর্যমুখী তেলের চাহিদা স্থানীয় ভাবেই মেটানো সম্ভব বলছেন সংশ্লিষ্টরা।