খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে প্রতি বছর ৪.৮ শতাংশ করে বাড়ছে ডেনিমের চাহিদা। এতে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এর বাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে ৭৬ বিলিয়ন ডলার।
ডেনিমের এই বাজারে শক্ত অবস্থানেই রয়েছে বাংলাদেশ। পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও ইউরোপ এবং আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে ডেনিম পণ্য।
বিশ্বব্যাপী ডেনিম কাপড়ের অবস্থান তুলে ধরতে ও ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রতিবছরের মত এবারও আয়োজন করা হয়েছে মেলার। জমজমাট ছিল দু'দিন ব্যাপী মেলার শেষ দিনটিও। ১১টি দেশ থেকে আগত প্রতিষ্ঠানগুলো জানালেন তাদের প্রত্যাশার কথা। মেলায় প্রত্যাশা পূরণ না হলেও ভালো সাড়া পেয়েছেন বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
একজন ব্যবসায়ী বলেন, 'মেলা থেকে রেসপন্স খুবই ভালো। এখন একটা ডিমান্ড চলে আসছে। একটা সময় এটা ছিল শুধু ভলেন্টারি।'
ডেনিম এক্সপোর শেষ দিনে এ খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। যেখানে কোম্পানিগুলো অটোমেশনের মাধ্যমে বিশ্ব বাজারে দখল বাড়াতে কাজ করছে বলে জানান বক্তারা।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক খান বলেন, এ খাতে নীতি ও অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জসমূহ উতরানো গেলে আরও এগিয়ে যাবে পোশাকশিল্প।
তিনি বলেন, 'আমাদের নীতি অবকাঠামো ও ব্যুরোক্রেটিক কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে আমরা ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি অর্জন করতে পারবো।'
অপরদিকে শুল্ক আদায়ের নামে পোশাকখাত প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি বলেন, 'অহেতুক চট্টগ্রাম পোর্টে আমরা ইমপোর্ট করতে গেলেও বাধাগ্রস্ত হই, রপ্তানির সময়েও বাধাগ্রস্ত হই। শুধু যে গার্মেন্টস শিল্প বাধাগ্রস্ত হয় তা নয়। আমাদের দেশে ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট যা কিছুই আমরা করি না কেন, এনবিআরের অসহযোগিতায় আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।'
বিশ্ববাজারে এ খাতের অংশীদারিত্ব বাড়াতে সহযোগিতার কথা জানান নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন।
ভবিষ্যতে পোশাক খাতের উন্নয়নে যে কোনো বিষয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, 'পোশাকের যথাযথ মূল্য বা ফেয়ার প্রাইজ দিবেন। আফ্রিকার কোনো নন কম্প্রাইন্ড দেশের পোশাকের তুলনায় আমাদের পোশাকের মূল্য বেশি হবে সেটিই তো স্বাভাবিক। পোশাক শিল্পের অগ্রগতির জন্য যেকোনো বিষয়ে আপনারা আমাকে পাশে পাবেন।'
বর্তমানে পরিবেশ রক্ষায় পানি, জ্বালানি ও কেমিক্যাল কম ব্যবহার করে ডেনিম কাপড় উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। সেক্ষেত্রে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বস্ত্র রিসাইকেল করার পরামর্শ দেন আলোচকরা।