খরা ও অতি বৃষ্টি কোনটিই ভালো মানের চা উৎপাদনের জন্য উপযোগী নয়। গেল বছরে চায়ের বাম্পার ফলন হলেও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ভালো মানের চায়ের সরবরাহ কম ছিল। নিলামে উত্তরবঙ্গের নিম্ন মানের চায়ের আধিক্য থাকায় ভালো দাম পান নি বাগান মালিকরা। এতে লোকসানে পড়ে অনেকেই। বাগান মালিকদের হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে উৎপাদন খরচের চেয়ে দাম কমায় লোকসানে আছেন বাগান মালিকরা। শুধু ২০২৩ সালেই ৪৬৫ কেটি টাকা লোকসান হয়েছে দেশের ১৬৮ টি বাগানের।
চট্টগ্রামে নিলামে চায়ের গড় দাম। ছবি: এখন টিভি
এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪-২৫ মৌসুমের নিলাম শুরুর আগেই চা নিলামের ৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ চা বোর্ড । নতুন নিয়মে চায়ের লিকারের মানের ভিত্তিতে ছয়টি গ্রেডে চায়ের সর্বনিম্ন দাম নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। এর চেয়ে কমে নিলামে কোন চা বিক্রি করা যাবে না বলে জানানো হয়।
লিকার রেটিং ন্যুনতম নিলাম মূল্য। ছবি: এখন টিভি
নতুন নিয়ম কার্যকরের পর চট্টগ্রামে দুটি নিলাম হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে নিলামে চায়ের সরবরাহ অনেক কম। ফলে ভালো মানের চায়ের চাহিদা থাকায় দামও বেড়েছে। টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে দাম নির্দিষ্ট করে দেয়ায় নিলামে অতি নিম্নমানের চায়ের সরবরাহ কমেছে।
বাংলাদেশ ট্রি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান মো ইকবাল হোসেন বলেন, 'লিকারের মান অনুযায়ী চায়ের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত মূল্যের নিচে চা বিক্রি হবে না।'
দাম বেঁধে দেয়ায় নিলামে চায়ের দাম বাড়লেও গুণগত মান অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়নি বলে অভিযোগ চা ক্রেতাদের।
ইউনিটি ব্রোকার্স লিমিটেডের পরিচালক সাঈদ সাফওয়াত হায়াত বলেন, 'নূন্যতম চায়ের লিকারের রেটিং ২ থাকতে হবে।'
এক্ষেত্রে শুধু লিকার রেটিং না ছোট ও বড় দানার চায়ের গ্রেডিং পৃথকভাবে করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে চায়ের গ্রেড ও দাম সংশোধনের সুযোগ আছে বলে মনে করেন তারা।
গেল বছর দেশে রেকর্ড ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয় । চট্টগ্রামে নিলামে চা বিক্রি হয়েছে ৯৪ মিলিয়ন কেজি। যার গড় মূল্য ছিল প্রায় ১৭২ টাকা।