রাজধানী ঢাকার সাথে দেশি-বিদেশি ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ২০১৩ সালে বুড়িগঙ্গার তীরে কেরানিগঞ্জে চালু হয় দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীণ পানগাঁও কন্টেইনার টার্মিনাল। যা নির্মাণে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে চট্টগ্রাম বন্দর। জমি অধিগ্রহণে তখন সহায়তা করেছিলো বিআইডব্লিউটিএ।
চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা ঢাকা থেকে অন্যান্য সমুদ্র বন্দরে পণ্য আনা নেয়াতে তেমন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেনি টার্মিনালটি। ২০২০ সালের আগ পর্যন্ত গড়ে বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কন্টেইনার ওঠানামা করলেও তা কমতে কমতে নেমে আসে ১ থেকে ২ হাজারে। সবশেষ, গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর যা নেমে আসে শূন্যের কোটায়।
এমন পরিস্থিতিতে আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে পানগাঁও টার্মিনাল পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সংসদের চিফ হুইপ, নৌ প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের বেশ কয়েকজন সচিব ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা। টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তারা। বৈঠক শেষে পানগাঁও টার্মিনালের অভিভাবক সংস্থা চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ব্যবসায়ীরা সেবা পান না বলেই তারা পানগাঁও টার্মিনাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
সচিব আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা দ্রুত কন্টেইনার ডেলিভারি নিতে পারছে না। আমাদের বন্দরের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। আমদানিকারকরা পানগাঁও টার্মিনাল দিলে এখানে কার্গো আসবে, কিন্তু এই ডেস্টিনেশন দিচ্ছে না।’
এসময় সালমান এফ রহমান বলেন, ‘পানগাঁওকে লাভজনক করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। সেবা দেয়া নিয়ে কাস্টমস ও শ্রমিকদের মধ্যে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে সমাধান করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোড কানেকশন আছে, কস্টিংয়ের ব্যাপার আছে, রেল কার্গোর সঙ্গে কস্টের তুলনা আছে। সমস্যাগুলো আমরা মোটামুটি চিহ্নিত করেছি এবং এগুলো সমাধানের জন্য কাজ করবো। এটা যেন লাভের মুখ দেখে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।’
পরিবেশ মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘পানগাঁও টার্মিনালের ব্যবহার বাড়লে পণ্য পরিবহনে অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সড়কে গাড়ি চলাচলও কমে যাবে। যার ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পানগাঁও টার্মিনালকে আরও প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছি। রোডের ওপর চাপ কমানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব একটা উপায়ও হবে। এই কারণে আমরা টার্মিনালকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
২০১৩ সালে চালুর পর দেশের টেক্সটাইল খাতের মোট পণ্যের ৪০ শতাংশ এই পানগাঁও টার্মিনাল থেকে পরিবহনের কথা থাকলেও তা আজও কার্যকর হয়নি।