রাশিয়ার নির্বাচনে তিন দিনের ভোটগ্রহণ চলছে। অনলাইনে ভোট দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নির্বাচনে কোন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় পুতিনের জয় অনেকটা নিশ্চিত। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে দুই বছর ধরে কার্যত পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে একাই লড়ছেন পুতিন। রুশ রাজনীতিতে আধিপত্য রেখে ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করতে যাচ্ছেন তিনি। বিভিন্ন জরিপ বলছে, এবারের নির্বাচনে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন পুতিন।
১০ বছর আগে রাশিয়ার অংশ হওয়া ক্রিমিয়া এবং চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলেও ভোট হচ্ছে। যদিও এসব অঞ্চলের ভোটগ্রহণকে প্রহসন বলছে ইউক্রেন।
এরইমধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে দুই দেশের মধ্যে। রুশ বাহিনীর জোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের বন্দর নগর ওডেসায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। ওডেসা সমুদ্রবন্দর দিয়েই অধিকাংশ পণ্য রপ্তানি করে ইউক্রেন।
এদিকে পুতিনের অভিযোগ, নির্বাচনকে বানচাল করতে ব্যালট বাক্সে আগুন, ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণসহ সাইবার হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এছাড়া আড়াই হাজার সশস্ত্র সেনা নিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করে ইউক্রেন। কিয়েভের এমন কর্মকাণ্ডের কড়া জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, 'রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চলছে। ভোটদানের প্রক্রিয়া ব্যাহত এবং জনগণকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে ইউক্রেন। এজন্য তারা সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হামলার পরিকল্পনা করেছে। এ কঠিন সময়ে সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে।'
তবে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলে ভোটের আয়োজনকে বেআইনি বলছে জাতিসংঘ। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্টের এমন কর্মকান্ডের নিন্দা জানানো হয়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, 'এটি একটি নির্লজ্জ কাজ, অবৈধভাবে ইউক্রেনের এসব অঞ্চল দখল করে মিথ্যা দাবিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সার্বভৌম ভূখণ্ডে রাশিয়ার নির্বাচন দিয়ে আগ্রাসন ও দমন-পীড়ন চালাচ্ছে মস্কো। যা জাতিসংঘের সনদের লঙ্ঘন।'
যুক্তরাজ্যের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর জেমস করিউকি বলেন, 'ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের একটি জালিয়াতি নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করছে ও ভয় দেখাচ্ছে রাশিয়া। এসব অঞ্চল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউক্রেন ভূখণ্ডের অংশ। আজ সেখানে জোর করে রাশিয়ান শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে।'
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা হবে ১৯ মার্চ। আর চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে ২৯ মার্চ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা অর্জনে এবারের ভোট ভূমিকা রাখবে। ক্ষমতায় গেলে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড গড়বেন পুতিন।