এশিয়া
বিদেশে এখন
0

কাজাখস্তানে ভয়াবহ পরিমাণে মিথেন নির্গমন

গেল বছর কাজাখস্তানের দুর্গম এলাকায় সবচেয়ে বিপর্যয়কর মিথেন বহির্গমনের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ মাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।

প্রতিবেদন বলছে, একটি কূপে বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুন লেগে মিথেন নির্গমন হতে থাকে, যা টানা ৬ মাস চলতে থাকে। কার্বন ডাই অক্সাইডের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিকর গ্রিনহাউজ গ্যাস মিথেন।

কূপের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক এতো বেশি মিথেন নিঃসরণের বিষয়টি অস্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা গ্রিনহাউজ গ্যাস সমতা পরিমাপক বলছে, এই কূপ দিয়ে এক লাখ ২৭ হাজার টন মিথেন গ্যাস বের হয়েছে। এতে পরিবেশের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, এক বছরে ৭ লাখ ১৭ হাজার পেট্রোলচালিত গাড়িতে সমপরিমাণ ক্ষতি হয়।

জাতিসংঘের মিথেন নিঃসরণ পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান বলছে, এতো বড় পরিসরে মিথেন বহির্গমনের ঘটনা অস্বাভাবিক। গত বছরের ৯ জুন কাজাখস্তানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মাঙ্গিস্তাউ অঞ্চলে কূপ খননের সময় ভয়াবহ আকারের বিস্ফোরণ হয় আর আগুন ধরে যায়। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ২৫ ডিসেম্বর। স্থানীয়রা জানান, এই কূপের মুখ বন্ধ করতে সিমেন্ট ব্যবহার করছেন তারা।

প্রাকৃতিক গ্যাস মিথেন দিয়ে তৈরি। যে গ্যাস মানুষের খালি চোখে ধরা পড়ে না। কিন্তু মিথেনের মধ্য দিয়ে যখন সূর্যালোক প্রবেশ করে, তখন অভিনব কিছু ছাপ তৈরি করে যা স্যাটেলাইটের ছবিতে ধরা পড়ে। এই মিথেন বহির্গমনের বিষয়টি সর্বপ্রথম নজরে আসে ফ্রেঞ্চ প্রতিষ্ঠান কায়রোসের কাছে। এরপর এই গবেষণার তদন্ত করে নেদারল্যান্ডসের ইনস্টিটিউট অব স্পেস রিসার্চ আর স্পেনের পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অব ভ্যালেন্সিয়া।

স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানান, জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫টি স্থানে মিথেনের উপস্থিতি পেয়েছে তারা। পরিসংখ্যান বলছে, একমাত্র এই কূপ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার টন মিথেন গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে। এই ঘটনাটি মানবসৃষ্ট মিথেন বহির্গমনের দ্বিতীয় কোন বিপর্যয়। পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি অব ভ্যালেন্সিয়া বলছে, রাশিয়ার নর্ড স্ট্রিম নাশকতা থেকে শুধুমাত্র এতো বেশি মিথেন নির্গমন হতে পারে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সমুদ্রের নিচে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ওয়ান ও নর্ড স্ট্রিম টু’তে বিস্ফোরণের কারণে ২ লাখ ৩০ হাজার টন মিথেন বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কূপ কর্তৃপক্ষ বলছে, স্যাটেলাইট ভুল তথ্য দিচ্ছে কিংবা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় কোথাও ভুল হচ্ছে। কারণ এই দুর্ঘটনার আগেও অনেক বেশি মিথেন বায়ুমন্ডলে ছিল।

এসএস

আরও পড়ুন: