ইউক্রেনের সহায়তার বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে। সহায়তা প্যাকেজের বিলটি পাশের জন্য কংগ্রেসকে অনেক দিন ধরেই বলে আসছে হোয়াইট হাউস। তবে রিপাবলিকানদের বিরোধীতায় কয়েক মাস ধরে বিলটি ঝুলে ছিল। এবার রাতভর ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক শেষে ভোটের মাধ্যমে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা বিলটি সিনেটে অনুমোদিত হয়।
রিপাবলিকানদের যুক্তি অন্য দেশকে সহায়তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের সমস্যার সমাধান করা উচিত। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বাইডেন প্রশাসন। সিনেটে বিলটি পাশের জন্য দরকার ছিল ৬০ ভোট। ২২ জন রিপাবলিকান সিনেটর ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে যোগ দেয়ায় বিলটি ৭০ ভোটে পাশ হয়। এখন প্রতিনিধি পরিষদে অনুমোদনের পর বাইডেন বিলে স্বাক্ষর করলে সেটি আইনে পরিণত হবে।
সহায়তা প্যাকেজের সবচেয়ে বড় অংশ ৬ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ইউক্রেনের জন্য। অস্ত্রের ঘাটতি ও যুদ্ধ পরিচালনায় নানা সংকটের মধ্যে ইউক্রেনের শেষ ভরসা ছিল ওয়াশিংটন।
এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় ইসরাইলকে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলার দেয়া হবে। ৪০০ কোটি ডলার তাইওয়ানের জন্য রাখা হয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মিত্রদের সহায়তা হিসেবে এই অর্থ দেয়া হবে। এছাড়া গাজা, পশ্চিম তীর ও ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তার জন্য অর্থ সহায়তা রাখা হয়েছে।
সিনেটের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আশা করি, প্রতিনিধি পরিষদেও বিলটি দ্রুত পাশ হবে। এদিকে অবশেষে ইউক্রেনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজটির ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
সিনেটে পাশ হওয়া বিলটি শুধু জাতীয় নিরাপত্তা নয়, মিত্রদের নিরাপত্তা এবং পুরো পশ্চিমা গণতন্ত্রের নিরাপত্তায় প্রভাব রাখবে।
সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার বলেন, বিশ্বকে স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক নীতি ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নেতৃত্ব দিতে হবে। সিনেটে এই বিলের মাধ্যমে প্রমাণ করে যে, আমেরিকান নেতৃত্ব ব্যর্থ হবে না। বিলে সবার জন্য সহায়তার কথা বলা আছে।
তবে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে বিলটির ভাগ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। ডানপন্থী রিপাবলিকান কয়েকজন আইনপ্রণেতা ইতোমধ্যে বিলটি আটকে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাদের দাবি, ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ব্যয় করা উচিত। তবে রিপাবলিকানরা বলছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেনকে সহায়তা না করলে রাশিয়া আরও আগ্রাসী হয়ে উঠবে। যা বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলবে।