বহু বছর ধরে সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুত শিল্পে তাইওয়ানকে টেক্কা দেয়ার চেষ্টা করছে চীন। যে কারণে অনেক নির্বাহী আর প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়া থেকে শুরু করে উৎপাদন সক্ষমতা নকল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। কিন্তু এখন পর্যন্ত অর্জন করতে পারেনি কোনো সফলতা। কোনভাবেই তাইওয়ানের মতো মানসম্পন্ন সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করতে পারেনি বেইজিং।
বর্তমানে বিশ্বের ৬২ শতাংশ সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করছে তাইওয়ান। এরমধ্যে ৯২ শতাংশই অত্যাধুনিক। দ্বীপাঞ্চলটির নবনিযুক্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে এর অভিযোগ, পিপলস রিপাবলিক অব চায়না কখনোই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতি অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে না।
জাতিসংঘে তাইওয়ানের প্রতিনিধি আলেক্সান্ডার ইউই বলেন, '২০ বছর ধরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য চীন। কিন্তু চীন কোনো নীতিই অনুসরণ করে না। নীতির সঙ্গে খেলা করে, নিজেদের মতো নিজেরা চলে। এখন দেখলাম, চীন প্রযুক্তি চুরিও করে। চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করা উচিত। আমরা যে নীতি মেনে ব্যবসা করি, চীনেরও মানা উচিত।'
রয়টার্সে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লাই চিং-তে বলেন, চীনের সম্ভাব্য সেনা অভিযানের কারণে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে তাইপে। চলতি বছর জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বাজেট। যা ১ হাজার ৯শ' মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। তাইওয়ানের প্রত্যাশা, নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে তাইপেকে আরও সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও অন্যান্য দেশ।
আলেক্সান্ডার ইউই আরও বলেন, 'সামরিক সহায়তা প্রয়োজন। নিজেরাও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। প্রশিক্ষণের জন্য বিমান, সাবমেরিন, রকেট আর ড্রোন তৈরি করছি। সামরিক প্রশিক্ষণ জোরদার করছি। তাইওয়ান নিজেদের নিজেরাই রক্ষা করতে পারে। কিন্তু সামরিক সহায়তা পেলে সবসময় স্বাগতম।'
চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার অভিযোগে সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফেকচারিং ইন্টারন্যাশনাল কর্প এস এম আই সি'সহ অনেক চীনা চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাইওয়ানের গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য বলছে, সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিভিন্ন অনৈতিক হস্তক্ষেপ আছে চীনের।
যদিও এই বিষয়ে অস্বীকার করে চীন বলছে, নিজেদের সক্ষমতায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন চালিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। তাই এ ধরনের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।