টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দুর্গাপুর গ্রামের ঝাড়ু ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম। ৮ বছর আগে পাহাড়ি উলু ফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরির কাজ শুরু করেন। এতে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছেন।
আব্দুল হালিম বলেন, '৮ বছর ধরে আমি এই কাজ করি। আমার পরিবার-আত্মীয় স্বজনসহ ১৫ থেকে ২০ জনের মতো কাজ করতো। তবে আগের মতো কাজ নাই।'
গ্রামটির প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন ভোরে সূর্য ওঠার পর শুরু হয় ঝাড়ু তৈরির কাজ। ঝাড়ু শিল্পকে কেন্দ্র করে এই গ্রামে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে ১০ হাজার মানুষের। এই শিল্পকে কেন্দ্র করে এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে গেছে।
শ্রমিকরা বলেন, 'আমরা এখানে প্রায় ৭ থেকে বছর যাবত কাজ করতেছি। আগে বেতন কম পাইতাম কিন্তু এখন ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা পাই। মহিলারা ঝাড়ুটা ফিটিং করে আর বাচ্চারা টেপ পেচায়।'
উলু ফুল দিয়ে ঝাড়ু তৈরি করছেন এক শ্রমিক
তবে উলু ফুলের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন সমস্যাসহ নানা সংকটে কুটির শিল্পটির অগ্রযাত্রা হুমকির মুখে পড়েছে বলে দাবি কারখানা মালিকদের। বলেন, 'উলু ফুলগুলো আমরা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, কাপ্তাই, বান্দরবান, কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করি।
আগের চেয়ে খরচ অনেক বেশি। সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে পণ্য আনলেও রাস্তাঘাটে আমরা নির্যাতিত হই। আগে ভালো বিক্রি হইতো। কারণ ব্যবসায়ী কম ছিলো। এখন ব্যবসায়ী বাড়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।'
ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র পাইকারি বাজারে এই ঝাড়ুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রতি পিস ঝাড়ুর পাইকারি দাম ৩৫ থেকে ৭০ টাকা। এতে প্রতি মাসে ৩ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়।
পটল ঝাড়ু ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, 'পণ্যের পরিবহন খরচ অত্যাধিক যা বলার মতো না। একগাড়িতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। সবমিলিয়ে ১০ হাজারের মতো কর্মসংস্থান এখানে।'
গেলো বছর জেলায় ঝাড়ু বিক্রি থেকে বাণিজ্য হয় ৩৫-৪০ কোটি টাকা।