গ্রামীণ কৃষি
কৃষি
0

আলুর ভালো দাম পেয়েও লোকসানের শঙ্কা চাষিদের

বগুড়ায় তীব্র শীত, কুয়াশা আর পচন রোগে এবার আলুর ফলন তুলনামূলক কম বলে দাবি কৃষকদের। কীটনাশক প্রয়োগ করেও পচন ঠেকাতে পারেননি। এ অবস্থায় ভালো দাম পেলেও লাভ করা নিয়ে সংশয়ে তারা।

১৫ শতাংশ জমি থেকে গেলো বছর ৫০ মণ সানসাইন জাতের আলু পেয়েছিলেন শিবগঞ্জের কলুমগাড়ী গ্রামের কৃষক মাহফুজুর রহমান। কিন্তু এবার আলু রোপণের ৭০ দিন পর মাত্র ২০ মণ পেয়েছেন।

তার দাবি, তীব্র কুয়াশায় পচন রোধে প্রতি শতাংশে ৩০০ টাকা খরচ করেও ফল পাননি। রোপণ থেকে উত্তোলন সবমিলিয়ে প্রতি শতাংশে দেড় হাজার টাকা খরচ করেছেন। আর নিজের শ্রম বাদে লাভ হয়েছে মাত্র দেড় হাজার টাকা।

মাহফুজুর রহমান বলেন, 'দুইদিন পর পর স্প্রে করছি। তারপরেও ব্যারামটা (রোগ) সারাইতে পারি নাই। আলুর বাজার বেশি দিলেও আমাদের পরিশ্রমের টাকা হচ্ছে না।'

একই উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক পলাশ পাইকার। প্রতি শতাংশ জমির আলু বিক্রি করেছেন ২ হাজার ৪০০ টাকায়। যা কিনে নেয়া ব্যাপারীর কপালে শতক প্রতি দুই মণের কম আলু জুটেছে। প্রতিমণ ১২০০ টাকায় বিক্রির পর শ্রমিক আর পরিবহন খরচ তুলতে তার হিমশিম অবস্থা।

কৃষক পলাশ বলেন, 'ভাবছিলাম শতকে আড়াই থেকে তিন মণ আলু হবে। কিন্তু এখন তা হইতেছে না। দেড় মণের মতো আলু হইতেছে।'

তবে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা নেই দাবি করে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন বেশি দামে বিক্রির আশায় অনেক কৃষক অপরিপক্ক আলু তুলছেন। যাতে ফলনও কম পাচ্ছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নাজমুল হক মন্ডল বলেন, 'বৈরী আবহাওয়ায় যেসকল রোগ দেখা দিয়েছিল এটা দমন হয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগ তৎপর আছে। চাষিরাও এখন সচেতন। আমরা দমন করতে পেরেছি। আলুর ফলনের বিপর্যয় ঘটেছে এ কথা ঠিক নয়।'

কৃষিবিদ মীর মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'আগাম আলু তারা (কৃষক) কিন্তু একটা ভালো দামে বিক্রি করতে পারছে। এজন্য তারা কিন্তু আর পরের কথা চিন্তা করছে না। যেহেতু তারা নগদ টাকা পাচ্ছে তাই বিক্রি করে দিচ্ছে। এরফলে আমাদের কিন্তু ফলন কমে আসতেছে।'

এর আগে আলুর ভরা মৌসুমে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আলুর মণ থাকলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে অন্তত ১২০০ টাকায়। এবার জেলার ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমি থেকে ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্য কৃষি বিভাগের।