বিদেশে এখন
0

সামরিক শক্তি বাড়াতে মরিয়া রাশিয়া

ন্যাটোর সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নিজেদের শক্তি বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাশিয়া। অস্ত্র উৎপাদন প্রতিযোগিতায় পশ্চিমাদের পেছনে ফেলতে এরইমধ্যে সামরিক খাতে কয়েকগুণ ব্যয় বাড়িয়েছে পুতিন প্রশাসন।

বেকারিতে পাউরুটির সঙ্গে বেরিয়ে আসছে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য তৈরি অত্যাধুনিক ড্রোন। এছাড়া মারণাস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন শপিংমল। এমনকি যুদ্ধাস্ত্র বানানোর কৌশল শেখানো হচ্ছে স্কুলপড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

যুদ্ধে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করা, পশ্চিমা সমরাস্ত্রের সক্ষমতাকে পেছনে ফেলা এবং ন্যাটোর চেয়ে নিজেদের বেশি শক্তিশালী প্রমাণ করতে এমন পন্থায় এগুচ্ছে রাশিয়া। তাই তো অস্ত্রের উৎপাদন বাড়াতে সমরাস্ত্র খাত ছাড়াও ব্যবহার করা হচ্ছে ইজেভস্ক শহরসহ বেশ কয়েকটি শহরের বেসামরিক অবকাঠামো। এমনকি এই খাতে ব্যয় করা হচ্ছে দেশটির মোট জিডিপির ৪০ শতাংশ। যা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার চেয়েও বেশি। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম টেলিগ্রাফের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।

পশ্চিমাদের সঙ্গে বৈরিতায় সমরাস্ত্র খাতে রাশিয়ার আধিপত্য বাড়ানোর কৌশলকে বিপজ্জনক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। সামরিক ব্যয় ও যুদ্ধাস্ত্র তৈরির পরিসংখ্যান চিত্র সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। যেখানে দেখা যায়, ২০২২ সালে রাশিয়া সামরিক ব্যয় ২.৭ শতাংশ বাড়ানো হলেও ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৯ শতাংশে। যা ২০২৪ সালে এসে বাড়ানো হয় ৬ শতাংশ, যা মোট সরকারি ব্যয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ।

সিপ্রির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় যা সর্বোচ্চ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ট্যাঙ্ক উৎপাদন ৫৬০ শতাংশ বাড়িয়েছে দেশটি। আর সাঁজোয়াযানের উৎপাদন বেড়েছে ৩৬০ শতাংশ। যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষয়ক্ষতি পূরণে এটি যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে অনেক পশ্চিমা কর্মকর্তা দাবি করছেন, বছরে ২০ লাখ আর্টিলারি শেল তৈরির পথে এগুচ্ছে মস্কো। যা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগের চেয়ে দ্বিগুণ। এমনকি ইরান ও উত্তর কোরিয়া থেকেও গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সরবরাহের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে। বিপরীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২০২৩ সালের হিসেব অনুয়ায়ী, বছরে ৩ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদন করছে ইউরোপ। যে কারণে ইইউ'র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই বছরের মার্চের মধ্যে ইউক্রেনকে ১০ লাখ গোলাবারুদ দেয়া সম্ভব না বলে জানিয়েছে জার্মানি।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ন্যাটোর বড়সড় মহড়া, সুইডেনকে পশ্চিমা জোটে যুক্ত করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতা এবং রাশিয়ার দিকে তাক করে যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক বোমা স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় মনোযোগ হারাচ্ছে ইউক্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, আরও ৩ থেকে ৪ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। মস্কোর অপ্রতিরোধ্য অস্ত্র তৈরির যাত্রা থেকেও সেই আভাস মিলছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর