সপ্তাহের রোববার কাঠের ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখর হয় এই বাজার। একদিন আগ থেকেই শত শত ব্যাপারী ট্রাক, পিকআপ যোগে বিক্রির উদ্দেশ্যে কাঠ নিয়ে এখানে হাজির হন। বরিশাল, ভোলা ও চট্টগ্রাম ছাড়াও আশপাশের বেশ কিছু জেলা থেকেও ব্যাপারীরা কাঠ বিক্রির উদ্দেশ্যে আসেন।
বিক্রেতারা বলেন, 'বরিশাল থেকে ব্যাপারী আসে। উনারা সেখানে কিনার পর আমাকে দাউদকান্দি বাজারে দেয়। তারপর আমি এই বাজারে নিয়ে আসি।'
সপ্তাহে একদিনে প্রায় কোটি টাকা কাঠ কেনাবেচা ছাড়ায়। ক্রেতার চাহিদা মতো দেশি ও বিদেশি নানান জাতের গাছের চেরাই কাঠ মিলছে। নতুন বাড়ি নির্মাণ, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, অফিস ও গৃহসজ্জার কাজে এ কাঠ ব্যবহার হচ্ছে।
গোমতী নদীর তীর ঘেঁষা এ বাজারে ব্যাপারীরা নৌপথে একসময় আসতেন। তবে বর্তমানে নানান সংকটে এখন সড়ক পথে আসছেন। এ বাজারের মধ্য দিয়েই গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও ব্যাপারীরা বলছেন ধীরে ধীরে কমছে বাজারের পরিধি ও বিক্রি। আর খাজনা বাড়ায় তারা বিপাকে পড়ছেন।
ব্যাপারীরা বলেন, 'পরিবহনের খরচ বাড়ছে, বাজারে আগের মতো ব্যবসা ভালো না। আগে খাজনা দিছি ১০০ টাকা আর এখন খাজনা নেয় ২ হাজার টাকা।'
গৃহসজ্জার নানান প্রয়োজনে কাঠ কিনতে আসা ক্রেতারা বলছেন একেবারে প্রস্তুতকৃত কাঠ পাওয়া যাচ্ছে। তবে অতিরিক্ত দাম বাড়ার কথা বলছেন।
ক্রেতারা বলেন, 'কাঠ নিতে আসছি কিন্তু দাম বেশি চাচ্ছে। মেহগনি গাছের ২টা কাঠের দাম চায় ১২০০ টাকা। তাহলে নিবো কিভাবে।'
নদী পথে চাঁদাবাজি এবং দখলে দাউদকান্দির গৌরীপুরের এ কাঠ বাজার জৌলস হারাচ্ছে। যার কারণে ব্যবসায়ীদের সংখ্যাও দিন দিন কমছে বলে মনে করেন দাউকান্দি কাঠ বাজারের ইজারাদার মো. আবদুল্লাহ। বলেন, 'পাইকারী-খুচরা মিলিয়ে ১ থেকে দেড় কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা চাইতো তাই নৌকাগুলো এখানে আসেনা, দাউদকান্দিতে ভিড়ে।'
ঐতিহাসিক এ বাজারের পরিধি বাড়ানো এবং দখল ঠেকাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরা।