জীবনযাপন
বিদেশে এখন
0

বস্তিতে ফ্ল্যাট মিলবে বাসিন্দাদের

পাল্টে যাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভারতের ধারাভি বস্তির চেহারা। বস্তির জায়গায় পুরো ফ্ল্যাট পাবেন বাসিন্দারা। মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় বস্তিটি উন্নয়নে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ভারতের আদানি গ্রুপ।

অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র স্লামডগ মিলিয়নিয়ারের মাধ্যমে সারাবিশ্বে পরিচিতি পেয়েছিল এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাভি। ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে অবস্থিত প্রায় ৬০০ একর আয়তনের ধারাভির জনসংখ্যা ১০ লাখের বেশি।

প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস দুই লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষের। কালের বিবর্তনে সম্পূর্ণ নতুন রূপ নিতে যাচ্ছে চরম ঘনবসতিপূর্ণ শতবর্ষী বস্তিটি।

চামড়া, মৃৎ, তৈরি পোশাক, সূচিকর্ম, রিসাইক্লিংসহ বস্তিতে গড়ে ওঠা নানারকম ক্ষুদ্রশিল্পের জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অঙ্গনে পরিচিত নাম ধারাভি। বস্তি হিসেবে যাত্রা শুরু ১৮৮৪ সালে। ব্রিটিশ উপনিবেশের ওই সময়ে একের পর এক কারখানাকে ঘিরে জীবিকার জন্য যখন মুম্বাইয়ে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটছিল, তখন ধারাভি হয়ে ওঠে শহরের নিম্নবিত্তদের বাসস্থান ও কর্মক্ষেত্র।

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে জায়গাটিতে। বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকায় রূপ দেয়ার মাধ্যমে ধারাভিকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করতে মহাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার, সঙ্গে আছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক ব্যবসায়ী সংগঠন আদানি গ্রুপ। ২০২২ সালে ৬১ কোটি ৪০ লাখ ডলারে ধারাভি বস্তি পুনর্গঠনের দায়িত্ব নেয় আদানি গ্রুপ।

ধারাভি রিডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেডের বরাত দিয়ে এনডিটিভি'র সোমবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুনর্গঠনে ন্যূনতম ৩৫০ বর্গফুটের একেকটি ফ্ল্যাট পাবেন উপযুক্ত বাসিন্দারা।

ভারতে অবস্থিত এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাভি

বস্তিবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে প্রতি ফ্ল্যাটে থাকবে আলাদা রান্নাঘর ও টয়লেট। আদানি গ্রুপের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নতুন ফ্ল্যাটে আগের চেয়েও ১৭ শতাংশ বেশি জায়গা পাবে প্রতিটি পরিবার।

বলা হচ্ছে, এই উদ্যোগে অর্থনীতিতে অবদান বাড়ানোর নানা সুযোগ পাবেন বস্তিটির বাসিন্দারা। ভবিষ্যৎ জীবনমুখী শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাও হবে জীবনের অংশ। পুনর্গঠিত প্রকল্পে থাকবে কমিউনিটি হল, বিনোদন ব্যবস্থা, উন্মুক্ত উদ্যান, হাসপাতাল এবং শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র।

তবে বর্তমান ১০ লাখ বাসিন্দার সবার ভাগ্যে জুটবে না স্বপ্নের নতুন আবাসন। যারা ২০০০ সালের ১ জানুয়ারির আগে থেকে বস্তিতে বাস করছেন। শুধুমাত্র তাদেরই নতুন প্রকল্পে উপযুক্ত বাসিন্দা হিসেবে ঠাঁই মিলবে।

বেসরকারি সাহায্য সংস্থা মহারাষ্ট্র সোশ্যাল হাউজিং অ্যান্ড অ্যাকশন লিগের জরিপ অনুযায়ী ধারাভির বৈধ বাসিন্দার সংখ্যা মাত্র ৪৭ হাজার এবং ১৩ হাজার বৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনা আছে এই বস্তিতে।

কেবল বৈধ বাসিন্দারা নতুন প্রকল্পে ফ্ল্যাটের মালিকানা পাবেন। অন্যদিকে অবৈধ যারা, তাদের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পে থাকবে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের আবাসন নীতি অনুযায়ী সাশ্রয়ী ভাড়ায় আবাসনের সুবিধা।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর