ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি টানা দুই মেয়াদে ৮ বছর ধরে তাইওয়ানের ক্ষমতায়। ২ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি এবার তাদের নতুন উত্তরসূরী নির্বাচনে নেমেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ও তার দলকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে দেখে চীন।
তবে নিজেদের চীনের অংশ মানতে নারাজ ডিপিপি। তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ডিপিপি দলের ঘনিষ্ট মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুওমিনতাং বা কেএমটি পার্টির ঐতিহ্যগতভাবে চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। যদিও তারা নিজেদের চীনপন্থী বলতে নারাজ। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে তাইপের সাবেক মেয়র কো ওয়েন জে-এর নতুন দল তাইওয়ান পিপলস পার্টি। বেইজিংয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রচারণা চালায় তারা।
এদিকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বক্তব্যে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একত্রিত করার ঘোষণা দেন চীনা প্রেসিডেন্ট। জবাবে তাইওয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে তা ঠিক করার একমাত্র অধিকার তাইওয়ানের জনগণের। নির্বাচনে চীনা হস্তক্ষেপের অভিযোগও তুলেন তিনি। ১৩ জানুয়ারি নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা বইছে এই অঞ্চলে।
চীনাদের দাবি তাইওয়ান চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি অংশ। যেকোনো মূল্যে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে মরিয়া চীন। আর আমেরিকা বলছে চীন যদি তাইওয়ানে বলপ্রয়োগ করে, তাহলে তারাও চুপ থাকবে না। দ্বীপ রাষ্ট্রটির বেশিরভাগ মানু্ষই বেইজিংয়ের অংশ হতে রাজি না। তাইওয়ান ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।
নির্বাচনের আগেই তাইওয়ান প্রণালীর আশেপাশে সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। যুদ্ধবিমান ও নৌজাহাজসহ চীনা বেলুন পাঠিয়ে তাইওয়ানকে চাপে রেখেছে বেইজিং। সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় চীন।
এদিকে মঙ্গলবার তাইওয়ানের আকাশসীমায় একটি চীনা স্যাটেলাইট উড়ে যায়। এরপরই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকার জন্য মোবাইলে জরুরি সতর্কবার্তা পাঠায়। স্যাটেলাইটের ধ্বংসাবশেষ এ অঞ্চলে পড়ার শঙ্কা থেকেই এমন বার্তা দেয়া হয়।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ বলেন, 'চীনের কর্মকাণ্ড উস্কানিমূলক। নির্বাচনের আগে তাইওয়ানের এমন গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে চীনারা এ ধরনের কাজ করছে।'
তাইওয়ানের সীমানায় বারবার বেলুন, স্যাটেলাইট, জাহাজ বা যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে চীন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড করছে। চীনের এসব কার্যকলাপ তাইওয়ানবাসীদের মধ্যে দুই দেশের যুদ্ধের আশঙ্কার জন্ম দিচ্ছে।'
ক্ষমতাসীন ডিপিপি দলের প্রচারণার গুরুত্ব পাছে 'যুদ্ধ না শান্তি' এই স্লোগান। এমন প্রচারণায় ভর করেই ২০২০ সালে ক্ষমতায় আসে তারা। মর্যাদাপূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছে দলটি।
অন্যদিকে কেএমটি বলছে তাদের ভোট না দেয়া মানে চীনের সঙ্গে তাইওয়ানবাসীর যুদ্ধে জড়ানো। সম্প্রতি জরিপে দেখা যায়, মার্কিন বিশ্বস্ততা নিয়েও তাইওয়ান নাগরিকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বস্ততা কমেছে ১১ শতাংশ তাইওয়ানবাসীর।





